সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জুলাই অভ্যুত্থানের হত্যা মামলার আসামি আব্দুল হামিদের দেশত্যাগের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত আইনগত ব্যবস্থা নিতে ‘সরকার বদ্ধ পরিকর’।
শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়েছে।
সরকারি ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ফ্যাসিবাদী সরকারের সাবেক রাষ্ট্রপতি ও হত্যা মামলার আসামি আবদুল হামিদের বিদেশ গমন সম্পর্কে জনমনে ক্ষোভ বিষয়ে সরকার অবগত। এ ঘটনার সাথে জড়িত সকলের বিরুদ্ধে উপযুক্ত আইনগত ব্যবস্থা নিতে সরকার বদ্ধপরিকর রয়েছে।’
জুলাই অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের ৯ মাস পর গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে দেশ ছাড়েন আবদুল হামিদ। রাত ৩টা ৫ মিনিটে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে ব্যাংকক যাত্রা করেন তিনি। তার বিরুদ্ধে গত ১৪ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জ সদর থানায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়।
সাবেক রাষ্ট্রপতির দেশত্যাগের ঘটনায় দেশের বিভিন্ন মহলে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠে।
দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে বৃহস্পতিবারই কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ হাছান চৌধুরী ও ইমিগ্রেশন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তাহসিনা আরিফকে প্রত্যাহার করা হয়। এছাড়া, আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে কিশোরগঞ্জে দায়ের হওয়া মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা, এসআই আজাহারুল ইসলাম ও পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) এটিএসআই মোহাম্মদ সোলাইমানকে করা হয় সাময়িক বরখাস্ত। পাশাপাশি ঘটনা তদন্তে গঠন করা হয় তিন সদস্যের কমিটি।
শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘সম্প্রতি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও জনগণের পক্ষ থেকে স্বৈরশাসন ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের অভিযোগে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার যে দাবি উঠেছে, তা সরকার গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছে। এ ব্যাপারে সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে ইতোমধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করেছে, তাদের সাথে আলোচনা করে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।’
‘এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের নেতা ও সমর্থকদের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিষয়ে জাতিসংঘের প্রতিবেদন সরকার বিবেচনায় রাখছে। সে পর্যন্ত সকলকে ধৈর্য ধারণ করার আহ্বান জানাচ্ছে। উল্লেখ্য যে, ইতোমধ্যে সরকার জনদাবীর প্রতি সম্মান জানিয়ে প্রচলিত আইনের অধীনে সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করেছে,’ বলা হয় বিবৃতিতে।
শুক্রবারই আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার রাষ্ট্রীয় বাসভবন ‘যমুনার’ সামনে দিন-রাত বিক্ষোভ করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি’। পরে তারা বাদ জুমা মিন্টো রেডে সমাবেশ করে। সেখান থেকেও সাবেক ছাত্র নেতারা একই দাবি জানান।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘এছাড়া, সরকারের পক্ষে থেকে মানবতাবিরোধী অপরাধের সাথে জড়িত সংগঠনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’