সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে বিদেশ যেতে সহায়তাকারীদের শাস্তির আওতায় না আনতে পারলে নিজে পদত্যাগ করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার বিকেলে দিনাজপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে বিদেশ যেতে সহায়তাকারীদের শাস্তির দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পথরোধ করেন।
দিনাজপুরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক একরামুল হক বলেন, ‘কোমলমতি শিক্ষার্থীদের রক্তের ওপরে দাঁড়িয়ে আছে এ সরকার। অথচ ফ্যাসিবাদ কায়েমকারীরা একে একে নিরাপদে দেশ ছাড়ছে, এটা কীভাবে সম্ভব হচ্ছে? সংস্কার তাহলে কোথায় হচ্ছে? যেসব পুলিশ শিক্ষার্থীদের বুকে গুলি চালিয়েছে, তারাই ফ্যাসিবাদের দোসরদের সহযোগিতা করে যাচ্ছে। সাবেক একজন রাষ্ট্রপতি নিরাপদে দেশ ছেড়ে পালাচ্ছেন, আর সরকার কিছুই জানে না। এটা হতে পারে না। সাবেক রাষ্ট্রপতিকে দেশত্যাগে সহায়তাকারীদের আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উপযুক্ত শাস্তির আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে তার পদ থেকে সরে যেতে হবে।’
এ পরিস্থিতিতে উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘আবদুল হামিদকে বিদেশে যেতে সহায়তাকারীদের কোনো অবস্থায় ছাড় দেওয়া যাবে না। আর যদি তাদের শাস্তির আওতায় না আনি, তাহলে আমি সে সময় চলে যাব।’
সাবেক রাষ্ট্রপতির দেশত্যাগ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি বিষয়টি জানতাম না। এখানে আসার সময় জানতে পারছি। আমি সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছি। যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাদের সবাইকে শুধু পদত্যাগ নয়, শাস্তির আওতায় আনতে হবে। আমি এরই মধ্যে কথা বলেছি। তারা কতটুকু এগিয়েছে, গাড়িতে যেতে যেতে হয়তো কিছু জানতে পারব। অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বৃহস্পতিবার বিকেলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তখন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের গেটের সামনে বসে বিক্ষোভ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। বৈঠক থেকে বেরিয়ে তিনি ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তিনি এই ঘটনায় জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের ৯ মাস পর বুধবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে ব্যাংককের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। এ ঘটনায় বিভিন্ন মহলে প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়।