আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা এবং বিচার সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশে কোনো জাতীয় নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না—এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
শুক্রবার জুমার নামাজের পর রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ ফটকে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা। এতে ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানার এনসিপির নেতা-কর্মীরা সমাবেশে অংশ নেন।
সমাবেশে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট জনগণ ‘আওয়ামী লীগের অবসান’ চূড়ান্ত করে দিয়েছে। সেই সিদ্ধান্তকে অমান্য করে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের যেকোনো চেষ্টাকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের যোদ্ধারা প্রতিহত করবে।
দলের যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের হাইকোর্ট দেখাবেন না। হাইকোর্ট দেখে জুলাই বিপ্লব হয়নি। আমলাতন্ত্রের অজুহাত মানা হবে না। আগে বিচার ও সংস্কার, তারপরই নির্বাচন।’
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক তাজনূভা জাবীন বলেন, ‘খুনি হাসিনাকে আমরা বিদায় দিয়েছি। এই বিজয় ধরে রাখতে হবে। বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ আর রাজনীতি করতে পারবে না, ইনশাআল্লাহ।’
অন্য এক যুগ্ম আহ্বায়ক আশরাফ উদ্দীন মাহাদী বলেন, ‘খুনি হাসিনাকে ফাঁসিতে ঝোলাতে হবে। তার বিচার না হলে নতুন নির্বাচন মানে শহীদদের রক্তের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।’
যুগ্ম আহ্বায়ক আতিক মুজাহিদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এবং তার দোসররা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি। তারা দেশে থাকতে পারে না।’
যুগ্ম সদস্যসচিব হুমায়রা নূর বলেন, ‘দিল্লির প্রেসক্রিপশনে বাংলাদেশ চলবে না। খুনি-গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতেই হবে।’
তাহসীন রিয়াজ, মাহিন সরকার, রফিকুল ইসলাম আইনী, সাইফুল্লাহ হায়দার প্রমুখ নেতারা বলেন, ‘আগামী দিনের রাজনীতি হবে আওয়ামী লীগকে চিরতরে বিদায় দেওয়ার রাজনীতি। তাদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়, কোনো নির্বাচন নয়।’
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ২০২৪ সালের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিহত খালেদ সাইফুল্লাহর পিতা কামরুল হাসান। তিনি বলেন, ‘আমার ছেলের বুকে ৭০টি গুলি করা হয়েছিল। এই হত্যার বিচার না হলে কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না।’
পৌনে পাঁচটার দিকে সমাবেশে যোগ দেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরউদ্দীন পাটওয়ারী, যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহ। বক্তৃতার ফাঁকে ফাঁকে চলতে থাকে নানা শ্লোগান।
সমাবেশ উপলক্ষে গুলিস্তানের জিরোপয়েন্ট থেকে বঙ্গভবনের দিকের প্রধান সড়কে যান চলাচল বন্ধ রায় আশপাশের এলাকায় দেখা দেয় তীব্র যানজট ও জনদুর্ভোগ।
সমাবেশস্থলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছিল সতর্ক অবস্থানে। সব ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয় বলে জানিয়েছে ডিএমপি।