জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদকন্যা ধর্ষণ মামলায় গ্রেপ্তার দুই আসামি আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিতে নিজেদের দোষ স্বীকার করেছেন। পরে তাদের পাঠানো হয়েছে জেল হাজতে। দলবদ্ধধর্ষণের ডিএনএ টেষ্টের রিপোর্ট রোববার (২৭ এপ্রিল) পটুয়াখালী পুলিশের কাছে এসে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
পটুয়াখালী পুলিশ সুপার আনোয়ার জাহিদ রোববার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে টাইমস অব বাংলাদেশকে এসব তথ্য জানিয়েছেন। তবে ধর্ষণের শিকার কলেজ পড়ুয়া মেয়েটি মামলার এসব কোনো অগ্রগতিই জেনে যেতে পারলেন না। শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাতে ঢাকার একটি বাসায় ‘আত্মহত্যা’ করেন তিনি।
স্বজনদের বরাত দিয়ে ঢাকার আদাবর থানা পুলিশ জানায়, রাত সাড়ে ৯টার দিকে গলায় ফাঁস দিয়ে মেয়েটি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
হাসপাতালে মেয়েটির মরদেহ গ্রহণের জন্য অপেক্ষমান এক স্বজন বলেন, ‘ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর মেয়েটি মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে।’ তিনি জানান, ‘সবশেষ মামলার প্রধান আসামি শাকিব জামিন পেয়েছেন এমন সংবাদে মর্মাহত হয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে আমরা ধারণা করছি।’
তবে শাকিবসহ আরো এক আসামি জেল হাজতে রয়েছেন বলে পুলিশ নিশ্চিত করেছে।
গত বছর ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় মোহাম্মদপুরে গুলিবিদ্ধ হন মেয়েটির বাবা। ১০ দিন পর তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর দুমকিতে তাকে কবর দেওয়া হয়। গত মার্চ মাসে দুমকিতে বাবার কবর জিয়ারত করে ফেরার সময় দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন মেয়েটি।
পরদিন দুজনকে আসামি করে মেয়েটি মামলা করেন। আসামি স্থানীয় জনতা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র শাকিব মুন্সি (১৯) এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র সিফাত (১৭)।
পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার আনোয়ার জাহিদ টাইমস অব বাংলাদেশকে জানান, ২০ মার্চ দুপুরের দিকে দুমকি থানায় মেয়েটি মামলা দায়ের করার পর ওইদিন বিকেল সাড়ে ৩টা নাগাদ মামলার আসামি শাকিব মুন্সিকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরের দিন জেলা গোয়েন্দা পুলিশ পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার একটি গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে সিফাতকে।
এসপি আনোয়ার বলেন, এর পর পরই গ্রেপ্তার দুই আসামি ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে দলবদ্ধধর্ষণের অপরাধের কথা স্বীকার করেন। পরে তাদের পাঠানো হয় জেল হাজতে।
মেয়েটিকে দলবদ্ধধর্ষণের ডিএনএ টেষ্টের রিপোর্ট রোববার (২৭ এপ্রিল) পটুয়াখালী পুলিশের কাছে এসে পৌঁছানোর কথা রয়েছে বলেও এসপি আনোয়ার জানান।