দক্ষিণ কোরিয়ার আকাশে যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধবিমানের যৌথ মহড়া চালানোর পর বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে উত্তর কোরিয়া। দেশটি জানিয়েছে, এ ধরনের মহড়া তারা নিজেদের ওপর আক্রমণের প্রস্তুতি হিসেবে দেখে এবং তারা এর উপযুক্ত জবাব দেবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে। খবর এপি/ইউএনবি’র।
মার্কিন বি-ওয়ান বি বোমারু বিমান মঙ্গলবার দক্ষিণ কোরিয়ার আকাশে প্রশিক্ষণ চালায়। এতে অংশ নেয় উভয় দেশের যুদ্ধবিমান। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই মহড়ার লক্ষ্য ছিল উত্তর কোরিয়ার ক্রমবর্ধমান পারমাণবিক হুমকির বিরুদ্ধে যৌথ প্রতিরোধ সক্ষমতা প্রদর্শন।
যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া নিয়মিতভাবে যে যৌথ সামরিক মহড়া করে থাকে, তা তারা প্রতিরক্ষামূলক বলে দাবি করে। তবে উত্তর কোরিয়া এই মহড়াগুলোকে আগ্রাসনের মহড়া হিসেবে দেখে এবং বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত অস্ত্র মোতায়েন—যেমন দূরপাল্লার বোমারু বিমান, বিমানবাহী রণতরী ও পারমাণবিক সাবমেরিন—নিয়ে অত্যন্ত সংবেদনশীল।
উত্তর কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যমে দেওয়া বিবৃতিতে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার সাম্প্রতিক সামরিক পদক্ষেপ আমাদের রাষ্ট্রের নিরাপত্তার প্রতি সরাসরি হুমকি এবং এটি এক মারাত্মক উস্কানি, যা গোটা অঞ্চলে সামরিক উত্তেজনা চরম পর্যায়ে নিয়ে গেছে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘যুক্তরাষ্ট্র এই অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে স্থায়ীভাবে অস্থিতিশীল রাখতে চায়। আমরা শক্তির মাধ্যমে সেই আগ্রাসী প্রচেষ্টাকে প্রতিহত করব।’
বি-ওয়ান বি বোমারু বিমান যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক বড় পরমাণুহীন অস্ত্র বহনে সক্ষম এবং এর আগে বহুবার উত্তর কোরিয়ার প্রতিক্রিয়ায় ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে দেশটি।
উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যকার বৈরিতা বর্তমানে চরমে। পিয়ংইয়ং একদিকে তার পরমাণু অস্ত্র ভাণ্ডার আধুনিকায়নের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধেও অস্ত্র ও সেনা দিয়ে সমর্থন জানাচ্ছে।
এদিকে, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে তার ব্যক্তিগত সুসম্পর্কের কথা তুলে ধরেছেন। গত ৩১ মার্চ তিনি কিমকে ‘অত্যন্ত বুদ্ধিমান’ এবং উত্তর কোরিয়াকে ‘একটি বড় পারমাণবিক শক্তিধর দেশ’ হিসেবে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘আমার আর কিমের মধ্যে চমৎকার সম্পর্ক রয়েছে এবং যোগাযোগও চলছে।’