ছয় দফা দাবিতে আন্দোলনরত পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা মন্ত্রণালয়ে বৈঠকের পরও কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে তারা ‘সন্তুষ্ট নন’ বলে জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। বৈঠকে শিক্ষা উপদেষ্টা অথবা সচিব উপস্থিত না থাকায় একজন অতিরিক্ত সচিব শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয় নিয়ে কথা বলেন।
বৈঠক শেষে শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম ‘কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের’ নেতা মাশফিক ইসলাম বলেন, ‘সভায় শিক্ষা উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন না, সচিব ঢাকার বাইরে অবস্থান করছেন। অতিরিক্ত সচিব আলোচনা করলেও তার পক্ষে তাৎক্ষণিকভাবে বহু সিদ্ধান্ত দেওয়া সম্ভব হয়নি। কুমিল্লায় আমাদের ভাইদের উপর হামলা হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে তারা নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এর কোনো কিছু নিয়েই আমরা সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত পাইনি। তাই সভা ফলপ্রসু হয়নি, উপদেষ্টা মহোদয় উপস্থিত থাকলে হয়তো ভালো হতো।’
কঠোর কর্মসূচির হুশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা কঠোর কর্মসূচির দিকে যাব। দাবি আদায়ের জন্য আমাদের আন্দোলন চলবে। অন্যান্যদের সঙ্গে আলাপ করে কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’
এর আগে বুধবার সকাল থেকে ছয় দফা দাবিতে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের সাত রাস্তা, মোহাম্মদপুর ও মিরপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ করেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক ও মহাসড়ক অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা। বৃহস্পতিবার রেলপথ অবরোধের ঘোষণা থাকলেও পরে মন্ত্রণালয়ে বৈঠকের কারণে তা স্থগিত করা হয়।
সরকারি ও বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যেই বুধবার রাতে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান খানকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তাকে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরে সংযুক্ত করে ইনস্টিটিউটের উপাধ্যক্ষ শাহেলা পারভীনকে অধ্যক্ষের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, জুনিয়র ইন্সট্রাকটর পদে ক্রাফট ইন্সট্রাকটরদের প্রমোশনের হাই কোর্টের রায় বাতিলসহ ক্রাফট ইন্সট্রাকটর পদবি পরিবর্তন এবং ওই মামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত সকলকে স্থায়ীভাবে চাকুরিচ্যুত করা, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স চার বছর মেয়াদী অব্যাহত রাখা এবং মানসম্মত সিলেবাস ও কারিকুলাম আধুনিক বিশ্বের আদলে প্রণয়ন করাসহ বিভিন্ন বিষয়। বুধবারের কর্মসূচিতে বাধা দেয়া ও লাঠিচার্জের বিচারও যোগ হয়েছে ৬ দফা দাবির সঙ্গে।