মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মঙ্গলবারের (১৫ এপ্রিল) নিয়মিত ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস হঠাৎ করেই বাংলাদেশের একটি আদালত কর্তৃক ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানার বিষয়টি অনেকটা অপ্রাসঙ্গিকভাবে উপস্থাপন করেন। যদি এ বিষয়ে সাংবাদিকরা কোনো প্রশ্ন করেননি।
আকস্মিকভাবে এ প্রসঙ্গ তোলায় বাংলাদেশের ওপর ওয়াশিংটনের নজরদারির মাত্রা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা তৈরি হয়েছে।
ব্রুস বলেন, ‘যুক্তরাজ্যের এমপি টিউলিপ সিদ্দিকর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেওয়া হয়েছে—বাংলাদেশি আদালতের মাধ্যমে…এগুলো বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের দেখভালের বিষয়’, তার বক্তব্য ছিল স্পষ্ট ও সতর্ক।
এই প্রথমবারের মতো যখন কোনো শীর্ষ মার্কিন কর্মকর্তা টিউলিপ সিদ্দিকের বিষয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করলেন।
ব্রিটেনের লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ শুরু থেকেই তার বিরুদ্ধে মামলাকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার’ বলে দাবি করে আসছেন।
টিউলিপের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তার খালা শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় তিনি অবৈধভাবে একটি সরকারি প্লট পেয়েছেন। অবশ্য টিউলিপ একে ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভীতিপ্রদর্শনের উদ্দেশ্য’ দাবি করে আসছেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিংয়ে প্রশ্ন ছাড়াই টিউলিপ প্রসঙ্গে ওই মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ। এক পর্যবেক্ষক বলেন, ‘ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের চরমপন্থা নিয়ে প্রশ্ন হচ্ছিল, টিউলিপ সিদ্দিকের নাম কেউ তোলেন নি। কিন্তু ব্রুস নিজে থেকেই বলেন, ‘বাংলাদেশ বিষয়ে আমি একটি কথা বলব—একজন ব্রিটিশ এমপিকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারির ঘটনা ঘটেছে।’
ব্রুস আরও বলেন, ‘এই সবকিছু, এমনকি প্রতিবাদ ইত্যাদিও, বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের বিষয়… বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে দেশটির জনগণ।’
বিশ্লেষকদের মতে, এতে যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের ‘হস্তক্ষেপকারী নয়’ হিসেবে তুলে ধরলেও রাজনৈতিকভাবে সচেতন অবস্থানের ইঙ্গিত দিয়েছে।
আরেক পর্যবেক্ষক বলেন, ‘প্রশ্ন ছাড়াই টিউলিপ ইস্যু তোলার অর্থ, বিষয়টি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গুরুত্ব পাচ্ছে।’
যদিও প্রকাশ্যে কোনো সমালোচনা করা হয়নি, তবে বিষয়টি ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক অস্বস্তির আভাস মিলেছে।