রাজধানীর খিলগাঁওয়ের আপন কফি হাউসে এক কিশোরীকে মারপিটের ঘটনায় হোটেল ম্যানেজার ও কর্মীকে হেফাজতে নিয়েছে রামপুরা থানা পুলিশ।
সোমবার দুপুরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেওয়া হয়। পুলিশ হেফাজতে নেওয়া দুজন হলেন কফি হাউসের ম্যানেজার আল আমিন ও কর্মী শুভ সূত্রধর।
পুলিশ জানায়, কফি হাউসে কিশোরীকে মারপিটের ঘটনাটি গত ১১ এপ্রিলের। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘটনার ভিডিও প্রকাশ পেলে তা পুলিশের নজরে আসে। পরে হোটেল ম্যানেজার ও কর্মীকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়।
এরআগে গত ১ মার্চ রাজধানীর মোহাম্মদপুরের লালমাটিয়া এলাকায় “প্রকাশ্যে ধূমপান” করার কারণে স্থানীয় বয়স্ক গোলাম মোস্তাকীম রিংকু নামের একজনের সঙ্গে ঝগড়ার ঘটনা ঘটে। বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে দুই তরুণীকে লাঞ্ছিত ও হেনস্তা করেন ওই ব্যক্তি। এরপর ১০ মার্চ রিংকুকে ডিবি হেফাজতে নেওয়া হয়। পরদিন তাকে আদালতে তুলে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করে পুলিশ। জামিনের আবেদন করেন আসামির আইনজীবীরা। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুমা রহমান রিংকুকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
খিলগাঁওয়ের ওই ঘটনার এক মিনিট ৩০ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, আপন কফি হাউসের সামনে এক কিশোরী দাঁড়িয়ে ছিল। সেখানে ওই হোটেলের চারজন কর্মী ও দুই জন নিরাপত্তাকর্মীকে দেখা যায়। কয়েকজন গ্রাহক কফি হাউসে প্রবেশ করলেও ওই কিশোরীকে ভেতরে প্রবেশ করতে দিচ্ছিলেন না হোটেল স্টাফরা। এক পর্যায়ে নিরাপত্তাকর্মীর কাছে থেকে লাঠি নিয়ে হোটেলের এক স্টাফ কিশোরীকে লাঠিপেটা করে। পরে রাস্তার পাশে কিশোরীকে চিৎকার-চেঁচামেচি করতে দেখা যায়। রাস্তার পাশে থাকা এক বাইকার তরুণ এগিয়ে এসে কিশোরীকে নিয়ে কফি হাউসে প্রবেশ করেন।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে আপন কফি হাউসের মালিক জিয়া টাইমস অব বাংলাদেশকে বলেন, ‘ওই মেয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন, সে অধিকাংশ সময় গ্রাহকের খাবার নিয়ে যায়, খাবার না দিলে অস্বাভাবিক আচরণ করেন। এজন্য ওইদিন তাকে মারধর করা হয়।’
থানা পুলিশকে না জানিয়ে কেন কিশোরীকে পেটালেন এমন প্রশ্নের জবাবে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি প্রতিষ্ঠানটির মালিক জিয়া।
তিনি বললেন, ‘প্রতিষ্ঠানে আমার থাকা হয় না, আমি অসুস্থ, আমি থাকলে এমন অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটতো না।’
এ বিষয়ে রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান টাইমস অব বাংলাদেশকে বলেন, আপন কফি হাউসের সামনে কিশোরীকে মারধরের ঘটনা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে আমাদের নজরে আসার পর আমরা কফি হাউসের ম্যানেজার ও এক কর্মীকে হেফাজতে নিয়েছি। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা কিশোরীকে মানসিক ভারসাম্যহীন বলে দাবি করেছে। তবে আমরা ভিডিও ফুটেজে কিশোরীর অবস্থান ও পোশাকে ভারসাম্যহীন বলে মনে হয়নি। আমরা যাচাই বাছাই করছি।
আতাউর রহমান আরও বলেন, ‘আমরা এখনো কিশোরীকে খুঁজে পাই নাই। তাকে খুঁজে পেলে বা তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা গেলে প্রকৃত ঘটনা জানা সম্ভব হবে। এখন পর্যন্ত থানায় সাধারণ ডায়েরি বা মামলা হয়নি। মারধরের শিকার কিশোরীকে খোঁজা হচ্ছে। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে, খুব দ্রুতই তার সন্ধান মিলবে।’