শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্যকোটায় ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। রোববার রাত ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। পরে রাত ১টা ৪০ মিনিটে আন্দোলনরত শত শত শিক্ষার্থীর উদ্দেশে উপাচার্য একই ঘোষণা দেন।
রাবির জনসংযোগ দপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরাজমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতিতে রোববার জরুরি সিন্ডিকেট সভা আহ্বান করা হয়েছে।
এর আগে, পোষ্যকোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এই কোটা বাতিলের দাবিতে বৃহস্পতিবার রাত থেকে আমরণ অনশনে নামেন সাত-আটজন শিক্ষার্থী। এতে অসুস্থ হয়ে পড়েন দু’জন।

এর আগে শনিবার শিক্ষার্থীরা অবরুদ্ধ করেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দীন, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদ, প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান ও জনসংযোগ প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদারসহ অনেককে। এক পর্যায়ে আন্দোলনকারীরা তাদের সাথে হাতাহাতিতে জড়ান।
এতে আহত হন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দীন, একজন উপ-রেজিস্ট্রার, রাবি ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আল শাহরিয়ার শুভ ও সাবেক সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মারসহ কয়েকজন।
হাতাহাতির একপর্যায়ে উপ-উপাচার্য জুবেরী ভবনের দ্বিতীয় তলায় চলে গেলে শিক্ষার্থীরা সেখানেই তাকে অবরুদ্ধ করে রাখে। এরই মধ্যে সেখানে ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক কামাল উদ্দিন, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদসহ কয়েকজন শিক্ষক উপস্থিত হন।

এক পর্যায়ে জড়ো হতে থাকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা, ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ বাম সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা ও রাকসুর পদপ্রার্থীরা। জুবেরী ভবনের ভিতরে স্লোগান দিয়ে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। কিছু শিক্ষার্থী দোতলায় উঠে কয়েকটি ঘরের জানালা ভাংচুর করে।
পরে রাত ১০টার দিকে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল আলীম রোববার শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীর পূর্ণদিবস কর্মবিরতির কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
এ ঘোষণার প্রতিবাদে ১৭টি হল থেকে শত শত শিক্ষার্থী একযোগে বের হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে আন্দোলন শুরু করেন। এরপর রাত ১টার দিকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে পোষ্যকোটার ভর্তি কার্যক্রম স্থগিতের ঘোষণা দেওয়া হয়।