কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে প্রতিদিন প্রায় সাড়ে ৩৪ টন প্লাস্টিক বর্জ্য ফেলা হয়। এর মধ্যে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক, মোড়কজাত প্লাস্টিক, পলিপ্রোপাইলিন ও লো-ডেনসিটি পলিথিনের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের এক গবেষণা প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
এমন বাস্তবতায় বিশ্বের দীর্ঘতম বালুকাময় সৈকতকে প্লাস্টিক বর্জ্যমুক্ত ও পরিবেশবান্ধব রাখতে ব্যতিক্রমী ‘বিচ ক্লিনআপ ক্যাম্পেইন’ আয়োজন করেছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ও ব্র্যাক।
শনিবার বিকালে বিশ্ব পরিচ্ছন্নতা দিবস উপলক্ষে সুগন্ধা পয়েন্ট থেকে কলাতলী পয়েন্ট পর্যন্ত কর্মসূচি পালন করা হয়।

কর্মসূচিতে জাতিসংঘ, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা, সরকারের জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ও ব্র্যাকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশ নেন। এ ছাড়া স্থানীয় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, তরুণ-তরুণী, উন্নয়নকর্মী ও পর্যটকসহ তিন শতাধিক মানুষ অংশ নিয়ে সৈকত পরিষ্কার করেন। গ্লাভস ও বর্জ্যব্যাগ হাতে নিয়ে তারা বিভিন্ন প্রকার প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ করেন।
ক্যাম্পেইনের কার্যক্রমে ছিল সৈকত পরিষ্কার, সচেতনতামূলক আলোচনা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।
ব্র্যাকের উপব্যবস্থাপক (গণসংযোগ) ফজলুল ইসলাম বলেন, ‘ব্যতিক্রমী এই আয়োজনটি স্থানীয় শিক্ষার্থী ও পর্যটকদের মধ্যেও ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।’
আয়োজনে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের জরুরি সহায়তা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক গোলাম মুকতাদির, কক্সবাজার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারি প্রকৌশলী আবুল মনজুর, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) কক্সবাজার সাব-অফিসের প্রজেক্ট ডেভলপমেন্ট স্পেশালিস্ট দিপক কে সি ইউনিসেফের ওয়াশ অফিসার সাজেদা বেগম, ইউএনএইচসিআরের ওয়াশ অ্যাসোসিয়েট আব্দুল মাজেদ, ব্র্যাকের মানবিক সংকট ব্যবস্থাপনা কর্মসূচির উপদেষ্টা সুব্রত কুমার চক্রবর্তী, কর্মসূচি প্রধান আব্দুল্লাহ আল রায়হান, প্রোগ্রাম কোঅর্ডিনেটর তনয় দেওয়ান ও জাকির হোসেন প্রমুখ।

গোলাম মুকতাদির বলেন, ‘নাগরিক সচেতনতা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে আমরা এই ক্যাম্পেইন করছি। আশা করি মানুষ নিজেরাই স্বপ্রণোদিত হয়ে সৈকত পরিষ্কারে উদ্যোগ নেবে।’
ব্র্যাকের গবেষণায় বলা হয়, বিশ্বব্যাপী সমুদ্রভিত্তিক বর্জ্যের প্রায় ৮৫ শতাংশই প্লাস্টিক, যা শত বছরেও নষ্ট হয় না। এ দূষণের কারণে সামুদ্রিক কচ্ছপ, ডলফিন, মাছ ও পাখি হুমকির মুখে পড়ছে।
এই বাস্তবতায় কক্সবাজার সৈকত পরিচ্ছন্ন রাখা, পরিবেশ রক্ষা এবং তরুণ-তরুণীদের অংশগ্রহণকে গুরুত্ব দিয়েই এবার বিচ ক্লিনআপ ক্যাম্পেইন করা হয়েছে।