পরিবেশ সুরক্ষায় কঠোর আইন প্রয়োগের হুঁশিয়ারি রিজওয়ানার 

টাইমস ন্যাশনাল
2 Min Read
গাজীপুরের প্রশিক্ষণ কর্মশালার সমাপনীতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিচ্ছেন রিজওয়ানা হাসান। ছবি: টাইমস

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, পরিবেশ সুরক্ষায় কঠোর আইন প্রয়োগ এবং ছাড়পত্র প্রদানে অনিয়ম দূর করতে হবে।

তিনি বলেন, ‘পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণে প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়াতে হবে।‘

শনিবার গাজীপুরের শ্রীপুরে বিশ্বব্যাংক আয়োজিত তিন দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালার সমাপনীতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রিজওয়ানা হাসান এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘আইন প্রয়োগ মানে কেবল জরিমানা নয়, বরং এতে স্বচ্ছতা, বিকল্প ব্যবস্থা ও জনগণের অংশগ্রহণ থাকতে হবে।’ এ সময় তিনি ভ্রান্ত পরিবেশ ছাড়পত্রকে অগ্রহণযোগ্য বলে উল্লেখ করেন।

তিনি ডাইং কারখানা, সিমেন্ট কারখানা ও ইটভাটা মতো প্রধান দূষণ উৎসগুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে শক্ত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে দূষণকারী শিল্পগুলোকে বাজেট ও পরিকল্পনা অনুযায়ী নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। দূষণকারীদের নাম প্রকাশ্যে আনুন। তথ্য উন্মুক্ত হলে জনগণ নিজেরাই রাজনৈতিক চাপ মোকাবিলায় সহযোগী হবে।’

বন্যা প্রবাহ এলাকা বা পরিবেশগতভাবে সংবেদনশীল স্থানে বর্জ্য ফেলার কেন্দ্র স্থাপনের জন্য ছাড়পত্র প্রদানের কঠোর সমালোচনা করেন তিনি।

এটিকে তিনি অবৈধ ও দায়িত্বজ্ঞানহীন বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক চাপ থাকলেও আপত্তি জানাতে হবে। দায়িত্ব পালন করতে না পারলে বদলি হোন, কিন্তু পরিবেশের সঙ্গে আপস করবেন না।’

উপদেষ্টা সব লাল ক্যাটাগরির শিল্পের পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন (ইআইএ) প্রতিবেদন পরিবেশ অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশ এবং জনগণের মতামত গ্রহণের আহ্বান জানান। তিনি উদাহরণ হিসেবে একটি দূষণকারী সিরামিক কারখানাকে জাতীয় পুরস্কার দেওয়ার সমালোচনা করে বলেন, ‘দূষণকারীদের শাস্তি দিতে হবে, পুরস্কৃত নয়।’

তিনি অভিযোগ নিষ্পত্তি প্রক্রিয়ায় ডিজিটালাইজেশন, অভিযোগ ট্র্যাকিংয়ের জন্য মোবাইল অ্যাপ চালু এবং স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

অনুষ্ঠানে বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের ডিভিশন ডিরেক্টর জ্যাঁ পেসম, দুর্নীতি দমন কমিশনের সাবেক মহাপরিচালক ও জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যাদুঘরের সাবেক মহাপরিচালক মোহাম্মদ মুনীর চৌধুরী, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফিন, বেস্ট প্রকল্পের পরিচালক একেএম রফিকুল ইসলাম এবং বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের পরিবেশ বিশেষজ্ঞ বুশরা নিশাত বক্তব্য দেন।

পরে রিজওয়ানা হাসান সারা দেশ থেকে আসা পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের হাতে সনদপত্র তুলে দেন এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য পরিবেশ রক্ষায় অঙ্গীকারবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *