পহেলা বৈশাখের শোভাযাত্রায় থাকছে ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’

টাইমস রিপোর্ট
2 Min Read
চারুকলায় পহেলা বৈশাখের শোভাযাত্রার জন্য যে মোটিফ তৈরি করা হচ্ছিল। ফাইল ছবি, ফোকাস বাংলা
Highlights
  • ফিলিস্তিনের নিপীড়িত জনতার প্রতি সংহতি জানিয়ে এবার শোভাযাত্রায় থাকছে তরমুজের মোটিফ, যা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধের প্রতীক হিসেবে পরিচিত।

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর প্রথম হতে যাওয়া পহেলা বৈশাখের (১৪ এপ্রিল) শোভাযাত্রায় থাকছে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যাঙ্গাত্মক রাক্ষুসে মোটিভ, যেটিকে ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ হিসেবে উপস্থাপন করা হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের আয়োজনে বর্ষবরণের প্রস্তুতি ইতোমধ্যে শেষ পর্যায়ে। এবারের আয়োজনে থাকছে ব্যতিক্রমী সব মোটিফের মধ্যে নির্মানাধীন ওই মোটিফটি এরই মধ্যে এসেছে নেটিজেনদের আলোচনায়।

‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ নয়, এবার ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’

নানা বিতর্কের পর ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ নামটি বাদ দিয়ে এবারের অনুষ্ঠানে নতুন নাম রাখা হয়েছে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’। শোভাযাত্রায় বড়, মাঝারি ও ছোট মোটিফ মিলিয়ে থাকবে শতাধিক শিল্পকর্ম। এর মধ্যে ৬টি বড় মোটিফের একটি হবে দাঁতাল নারীর মুখাকৃতি—যার মাথায় খাড়া দুটি শিং থাকবে। আয়োজকরা বলছেন, এটি প্রতীকীভাবে ফ্যাসিবাদকে তুলে ধরবে।

ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান বলেন, ‘ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতি দেখে কেউ যদি কারো সঙ্গে মিল খুঁজে পান, তা সম্পূর্ণ তার ব্যক্তিগত উপলব্ধি। আমরা বরাবরের মতোই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান জানিয়ে আসছি।’

শোভাযাত্রায় থাকবে প্রতিরোধের চিত্র

শোভাযাত্রার অন্যান্য মোটিফের মধ্যে থাকছে কাঠের বাঘ, ইলিশ মাছ, ‘৩৬ জুলাই’ টাইপোগ্রাফি, শান্তির পায়রা, পালকি, এবং জুলাই আন্দোলনে নিহত মুগ্ধের স্মরণে নির্মিত পানির বোতলের প্রতিকৃতি। ১৫ ফুট দীর্ঘ রডের তৈরি এই বোতলের ভেতরে থাকবে একাধিক খালি বোতল—যেগুলো আন্দোলনে নিহতদের প্রতীক হিসেবে স্থান পাবে।

 

এছাড়াও থাকছে—

  • ৮০টি ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’
  • ১০টি সুলতানি ও মুঘল আমলের মুখোশ
  • ২০টি রঙিন চরকি
  • ২০০টি বাঘের মাথা
  • ৮টি তালপাতার সেপাই
  • ৫টি তুহিন পাখি
  • ৬টি মাছ ধরার চাই
  • ২০টি মাথাল
  • ২০টি ঘোড়া
  • ১০০ ফুট দৈর্ঘ্যের লোকজ চিত্রাবলী

ফিলিস্তিনের সঙ্গে থাকছে সংহতি

ফিলিস্তিনের নিপীড়িত জনতার প্রতি সংহতি জানিয়ে এবার শোভাযাত্রায় থাকছে তরমুজের মোটিফ, যা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধের প্রতীক হিসেবে পরিচিত।

চারুকলার সম্মুখভাগে রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী শখের হাঁড়ি এবং জয়নুল শিশু নিকেতনের দেওয়ালে সাঁওতালদের মাটির দেওয়াল অলংকরণে আঁকা চিত্রও থাকবে এবারের আয়োজনে।

আয়োজকরা জানান, এই বৈশাখী আয়োজনটি শুধু সংস্কৃতির নয়, বরং একটি রাজনৈতিক বার্তাও বহন করছে—ফ্যাসিবাদবিরোধী প্রতিবাদের প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠছে বাংলা নববর্ষের শোভাযাত্রা।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *