আরাকান আর্মি ইয়াবা চোরাকারবারের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে এবং তাদের মাধ্যমেই বাংলাদেশে ইয়াবা প্রবেশ করছে বলে জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
তিনি বলেন, ‘আরাকান আর্মিও ইয়াবা চোরাকারবারের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। আমাদের দেশের কিছু অসাধু ব্যক্তি তাদের কাছ থেকে ইয়াবা এনে বাংলাদেশে ঢোকাচ্ছে, যা দেশের জন্য বড় হুমকি।’
সোমবার কক্সবাজারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে রামু সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মহিদ্দিন আহমেদ এ তথ্য জানান।
কর্নেল মহিদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘রোহিঙ্গারা সীমান্ত দিয়ে ইয়াবা পারাপারে জড়িত। তারা খুব দ্রুত স্থান পরিবর্তন করে, এজন্য তাদের ধরা কঠিন হয়ে পড়ে।’
তিনি আরও বলেন, ‘উপকূলীয় এলাকায় মাদক চোরাকারবার এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। উখিয়া-টেকনাফ সীমান্তে কঠোর নজরদারির কারণে চোরাকারবারিরা এখন সমুদ্রপথ ব্যবহার করছে বেশি।’
‘আমাদের ধারণা, মহেশখালী, বাঁশখালী, কুতুবদিয়া, আনোয়ারা ও কুয়াকাটা উপকূল হয়ে প্রায় ৮০ শতাংশ মাদক বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। এসব রুট দিয়ে শুধু দেশের অভ্যন্তরে নয়, অন্য দেশেও মাদক পাচার হচ্ছে, যা তরুণ প্রজন্ম ও অর্থনীতির জন্য ভয়াবহ হুমকি,’ উল্লেখ করেন তিনি।
মহিদ্দিন জানান, বিজিবি, নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড সমন্বিতভাবে গভীর সমুদ্রপথে চোরাচালান ঠেকাতে কাজ করছে।
নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তকেও ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দুর্গম এলাকা ও দুর্বল যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে ওই এলাকায় নজরদারি করা খুব চ্যালেঞ্জিং।’
আরাকান আর্মির হাতে জেলে আটক হওয়ার প্রসঙ্গে বলেন, ‘ওই বাহিনীর হাতে ১০৪ জন বাংলাদেশি জেলে বন্দী।’ এর আগে মোট ২২৮ জনকে আটক করা হয়েছিল, যাদের মধ্যে ১২৪ জনকে ফেরত আনা হয়েছে। এর মধ্যে ৯৫ জন বাংলাদেশি এবং ১৩৩ জন রোহিঙ্গা।
তিনি বলেন, ‘আরাকান আর্মি সরকারি কোনো বাহিনী না হলেও সীমান্তের প্রতিবেশী হিসেবে তাদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ আছে। এই যোগাযোগের কারণেই অনেক জেলেকে ফেরত আনা সম্ভব হয়েছে। বাকি জেলেদেরও যথাযথ প্রক্রিয়া শেষে ফেরত দেওয়া হবে।’
কর্নেল মহিদ্দিন জানান, জেলেরা তখনই আটক হন যখন তারা ভুল করে কিংবা ইচ্ছা করে মিয়ানমারের জলসীমায় প্রবেশ করেন। তবে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, ‘আরাকান আর্মি কখনোই বাংলাদেশের জলসীমায় ঢুকে জেলেদের আটক করেনি। আমরা আমাদের জেলেদের বারবার সতর্ক করি যেন তারা সমুদ্রসীমা অতিক্রম না করে।’
ব্রিফিংয়ে তিনি আরও জানান, গত ১৫ জুলাই থেকে বিজিবি কক্সবাজার সীমান্ত ও বান্দরবানের কিছু অংশ থেকে প্রায় ২৮ লাখ ইয়াবা জব্দ করেছে। এ সময়ে আধুনিক রাইফেলসহ ২২টি আগ্নেয়াস্ত্রও উদ্ধার করা হয়েছে।