চট্টগ্রামে ১৪৪৭ হিজরি সনের পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষ্যে আয়োজিত হয়েছে ৫৪তম বিশাল জশনে জুলুস। এ উপলক্ষ্যে শুক্রবার সারা রাতই জেলা শহরের সড়কগুলো সরব ছিল মানুষের আনাগোনায়। সড়কের দুই পাশ সাজানো হয়েছে পতাকা, ব্যানার আর ফেস্টুনে।
শনিবার সকাল ৮টায় নগরের ষোলশহর জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসা থেকে বের হয় বর্ণাঢ্য জশনে জুলুস। এতে নগর ও বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে আসা লাখ লাখ মানুষ অংশ নেন।
১৯৭৪ সাল থেকে প্রতিবছর ১২ রবিউল আউয়াল আনজুমান-এ-রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় চট্টগ্রাম নগরীতে এ জশনে জুলুস অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ্ (রহ.) এর প্রবর্তন করেন।

এদিন ভোর থেকেই নানা প্রান্ত থেকে আয়োজনের স্থানে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপনে ছুটে আসেন হাজারো ধর্মপ্রাণ মুসলমান। বেলা বাড়তেই চট্টগ্রাম নগরের ষোলশহর এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়। এর আগে রাতেই সেখানে দেশ ও জাতির সমৃদ্ধি, কল্যাণ কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
জুলুস বিবিরহাট হয়ে মুরাদপুর থেকে ট্রাফিক পুলিশ বক্সের ডান দিকে মোড় নিয়ে ষোলশহর, দুই নম্বর গেট, জিইসি মোড় ঘুরে দুপুরে জামেয়া মাদ্রাসা মাঠে মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। কেউ হেঁটে, কেউ মোটরসাইকেলে, আবার কেউ ট্রাক কিংবা পিকআপে চেপে জুলুসে অংশ নেন। জুলুসের সময় হামদ, নাত, তাকবির, দরুদ শরিফ ও জিকিরে নগরীর সড়কগুলো হয় মুখরিত।

এ আয়োজনকে ঘিরে নগরের বিভিন্ন সড়কে ভাসমান মেলাতে টুপি, মেসওয়াক, তসবিহ, ইসলামি বই, আতর, পতাকা, পাঞ্জাবি, পাজামা, জুতা বিক্রি হয়। জুলুসে অংশগ্রহণকারীদের অনেকে শরবত, পানি, চকলেট, জিলাপি ও খেজুর বিতরণ করেন।
এই জশনে জুলুসে নেতৃত্ব দেন আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবের শাহের। এতে শাহজাদা সৈয়্যদ মুহাম্মদ কাসেম শাহ ও মেহমুদ আহমদ শাহ অতিথি হিসেবে অংশ নেন।

জুলুসের জন্য নগরে বিভিন্ন সড়কে নিরাপত্তায় চট্টগ্রাম নগর পুলিশ বাহিনীর সদস্য ও গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা কাজ করেন। নগরের বিবিরহাট, মুরাদপুর, পাঁচলাইশ, হামজারবাগ, শুলকবহর, মির্জারপুল রোডসহ বিভিন্ন সড়কে বিভাজক স্থাপনের মাধ্যমে ডাইভারশন করা হয়।
নগর পুলিশের উপকমিশনার (ট্রাফিক–উত্তর) নেছার উদ্দিন আহমদ দ্য টাইমস অব বাংলাদেশকে বলেন, ‘জুলুস চলাকালে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নগর পুলিশের অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়।’