ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত আফগানিস্তানে মানবিক সহায়তা পাঠিয়েছে বাংলাদেশ। বিমান বাহিনীর একটি সি-ওয়ান থ্রি জিরো জে বিমানে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য অতি প্রয়োজনীয় নিত্য ব্যবহার্য পণ্য, খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও চিকিৎসা সামগ্রী পাঠায় অন্তর্বর্তী সরকার।
শুক্রবার সকালে বিমান বাহিনীর ওই উড়োজাহাজটি আফগানিস্তানের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে।
ঢাকার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কাবুলের দুর্যোগ মোকাবেলায় সর্বোচ্চ সহযোগিতা নিয়ে পাশে থাকবে বাংলাদেশ। সে প্রতিশ্রুতি রক্ষায় দ্রুত সাড়া দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। তার নির্দেশে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী এসব মানবিক সহায়তা আফগানিস্তানের দুর্গম অঞ্চলে পৌঁছে দেবে।
১১ দশমিক ২২৭ টন ত্রাণ সহায়তার মধ্যে রয়েছে তাঁবু, কম্বল, শীতবস্ত্র, খাবার পানি, শুকনো খাবার, কাপড়, বিস্কুট, গুঁড়া দুধ, নুডুলস এবং ওষুধ।
আফগানিস্তানে এসব ত্রাণ সামগ্রী হস্তান্তর শেষে বিমান বাহিনীর পরিবহন বিমানটির শুক্রবারই দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
সকালে বিমানটি দেশ ছাড়ার আগে ব্রিফ করেন সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের অপারেশন্স ও পরিকল্পনা পরিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আলীমুল আমীন। এ সময় সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ ও বিমান বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
গত সোমবার আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্তে কুনার ও নানগারহারের প্রদেশে ৬ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে প্রাণ হারিয়েছেন দেড় হাজারের বেশি মানুষ। আহত হয়েছেন অন্তত তিন হাজার ৪০০ জন।
বিধ্বংসী ভূমিকম্প এবং পরের একাধিক মৃদু কম্পনে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে ছয় হাজার ৭০০টির বেশি ঘরবাড়ি ও স্থাপনা। এরই মধ্যে শুক্রবার রাতে দেশটিতে ফের ছয় দশমিক দুই মাত্রার ভূমিকম্প হয়। এবারও অসংখ্য হতাহতের শঙ্কা জানিয়েছে দেশটির তালেবান সরকার।
আন্তর্জাতিক রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট ফেডারেশন (আইএফআরসি), জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা সতর্ক বার্তায় বলেছে, একের পর এক ভূমিকম্পে আফগানিস্তানে একটি গুরুতর মানবিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এতে প্রায় ৮৪ হাজার মানুষ সরাসরি বা পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এবং হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো বলছে, উদ্ধারকার্যক্রমের জন্য অর্থায়নের ঘাটতি এবং দুর্গম এলাকায় সরবরাহ জটিলতার কারণে জরুরি সহায়তা পৌঁছানোও ব্যাহত হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, জরুরি চিকিৎসা সামগ্রীর জন্য আফগানিস্তানে অন্তত ৩০ লাখ ডলারের ঘাটতি রয়েছে। সেইসঙ্গে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) সতর্ক করে জানিয়েছে, দুর্যোগের শিকার ব্যক্তিদের জন্য কেবল আর চার সপ্তাহের খাবার মজুদ আছে।