অন্য ব্যাংকের সঙ্গে একীভূতকরণ প্রক্রিয়ায় যুক্ত হতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে বেসরকারি এক্সিম ব্যাংক।
বুধবার দুপুরে বাংলাদেশ ব্যাংকের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ অবস্থানের কথা জানিয়েছে ব্যাংকটির কর্তৃপক্ষ।
ওই বৈঠকে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য এক্সিম ব্যাংক নিজেদের পরিকল্পনা তুলে ধরলে তা সংশোধন করে নিয়ে আসতে বলেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বৈঠক শেষে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম স্বপন টাইমস অব বাংলাদেশকে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘আমরা কীভাবে এগোবো, কীভাবে ঘুরে দাঁড়াবো; তার একটি রোডম্যাপ উপস্থাপন করেছি। বাংলাদেশ ব্যাংক আরও সুনির্দিষ্টভাবে আমাদের কাছে পরিকল্পনা চেয়েছে। পরবর্তী বৈঠকে আমরা এটি নিয়ে হাজির হব।’
তবে এক্সিমের সঙ্গে পরবর্তী বৈঠকটি কবে হবে, তা এখনো জানায়নি কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বৈঠকে ভার্চুয়ালি অংশ নেন। এসময় চার ডেপুটি গভর্নর সহ ব্যাংক রেজল্যুশন বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে ব্যাংকটির পর্ষদ সদস্য ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এক্সিম ব্যাংকের এই সিদ্ধান্ত এমন সময় এল যখন ব্যাংকটির আর্থিক অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। ১৫৫টি শাখা ও প্রায় ১৫ লাখ গ্রাহকের এই ব্যাংকটি ৯১০ কোটি টাকা মূলধন ঘাটতির মুখে রয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেপ্টেম্বরে এক্সিম ব্যাংক খেলাপির পরিমাণ জানিয়েছে ৩ হাজার ৫৭৯ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৬ দশমিক ৯১ শতাংশ।
তবে, একিউআর প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ব্যাংকটির খেলাপির পরিমাণ আরও অনেক বেশি। টাকার অংকে যা ২৫ হাজার ১০১ কোটি টাকা এবং মোট খেলাপি ঋণের ৪৮ দশমিক ২০ শতাংশ।
এ পর্যন্ত এক্সিম ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ৯ হাজার ৯৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত তারল্য সহায়তা পেয়েছে। গত বছরে ব্যাংকটি ৪০৯ কোটি টাকা লোকসান করেছে, যা একীভূত হতে যাওয়া ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
এর আগে সকালে ইউনিয়ন ব্যাংকের সঙ্গে এবং মঙ্গলবার ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের সঙ্গে একই বৈঠক করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। এ দুটি ব্যাংকই একীভূতকরণে রাজি হয়েছে।
সংকটাপন্ন পাঁচটি ব্যাংক একীভূতকরণে আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের নেতৃত্বে ধারাবাহিক বৈঠক করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বৃহস্পতিবার সকালে গ্লোবাল ইসলামী ও বিকেলে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠকের নির্ধারিত সূচি রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগে একীভূতকরণ প্রক্রিয়ায় যুক্ত থাকা শরিয়াভিত্তিক ব্যাংকগুলো হলো: ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক।
এগুলোর সম্মিলিত খেলাপির পরিমাণ ৭৭ শতাংশের বেশি। আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে কোনো ব্যাংকের খেলাপি ৩০ শতাংশের বেশি হলে সেটি অবলোপন বা পুনর্গঠনের উপযুক্ত।