ছয় দফা দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দু’টি দাবি মেনে নিয়েছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) প্রশাসন। বাকি চার দাবির বিষয়েও যৌক্তিক আলোচনা চলমান থাকবে। প্রশাসনের আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
এর আগে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আলোচনার আহ্বান জানানোর পর চলমান ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথ অবরোধ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা।
বার্তা সংস্থা ইউএনবি’র খবরে বলা হয়, মঙ্গলবার রাতে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে পাঠানো প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। প্রায় চার ঘণ্টা আলোচনার পর শিক্ষার্থীদের দু’টি দাবি তাৎক্ষণিকভাবে মেনে নেওয়ার কথা জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক শহিদুল হক। বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া অনলাইনে ওই বৈঠকে যুক্ত ছিলেন।
মো. শহীদুল হক বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা এখন থেকে হলে থাকতে পারবেন। বুধবার সিন্ডিকেট মিটিংয়ে বিজ্ঞপ্তি আকারে হল ত্যাগের নির্দেশনা প্রত্যাহার করা হবে।’ তাছাড়া আগামী সাত দিনের মধ্যে ক্লাস-পরীক্ষা শুরুর ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও আশা করেন তিনি।
পশুপালন ও ভেটেরিনারি অনুষদ একীভূত করে কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবিতে গত একমাস ধরে আন্দোলন করে আসছিলেন বাকৃবি শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর রোববার রাতে হামলা চালায় বহিরাগতরা।

এ সময় শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে বিক্ষোভে ফুঁসে উঠলে পরিস্থিতি শান্ত করতে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে প্রশাসন। সেইসঙ্গে সব ছাত্র-ছাত্রীদের গত সোমবার সকাল ৯টার মধ্যে হলত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
তবে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা এবং শিক্ষার্থীদের হলত্যাগের নির্দেশনা প্রত্যাখ্যান করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় সংবাদ সম্মেলনে ছয় দফা দাবি জানান বিক্ষোভকারীরা।
তবে প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা শেষে ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা জানান, কম্বাইন্ড ডিগ্রির বিষয়ে একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্তই বলবৎ থাকবে। বহিরাগতদের হামলায় শিক্ষার্থীরা আহত হওয়ার ঘটনায় তদন্ত কমিটি রিপোর্ট দেওয়ার পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
শিক্ষার্থীদের পক্ষে এ এন এম এহসানুল হক হিমেল জানান, কম্বাইন্ড ডিগ্রির বিষয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় নি। পরবর্তীতে এই বিষয়ে আরও আলোচনা করা হবে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের একক কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবির পক্ষেই আমরা অবস্থান করছি। তবে আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) আমরা কোনো আন্দোলন কর্মসূচি রাখিনি।’
আন্দোলনরত আরেক শিক্ষার্থী শিবলী জানান, আন্দোলনে যেসব শিক্ষার্থী জড়িত ছিল, তাদের প্রশাসনিক বা অ্যাকাডেমিক কোনো ধরনের হ্যারাসমেন্ট করা হবে না বলে উপাচার্য আশ্বাস দিয়েছেন।
তবে এ বিষয়ে শিক্ষার্থীরা লিখিত চাইলে উপাচার্য বুধবারের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান বলে উল্লেখ করেন এই শিক্ষার্থী।