ভারতীয় পণ্যে জরিমানাসহ অতিরিক্ত ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর করল যুক্তরাষ্ট্র। বুধবার সকাল থেকেই এটা কার্যকর হয়। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি দপ্তর মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা অব্যাহত রাখায় দিল্লির ওপর এ অতিরিক্ত শুল্ক চাপানো হল।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার ডট কমের খবরে বলা হয়, সাত পাতার ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ২৭ অগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের ইস্টার্ন জোন বা রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির সময় অনুযায়ী রাত ১২টা ১ মিনিট এবং ভারতীয় সময় অনুযায়ী বুধবার সকাল ৯টা ৩১ মিনিট থেকে ওই নতুন শুল্ক কার্যকর হবে।
ওই সময়ের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে কোনো ভারতীয় পণ্য প্রবেশ করলে তার জন্য বাড়তি শুল্ক দিতে হবে। আগে থেকে কার্যকর ২৫ শতাংশ শুল্কের পাশাপাশি ২৫ শতাংশ ‘বাড়তি শুল্ক’ (জরিমানা) কার্যকর করার কারণও স্পষ্ট জানিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।
ওয়াশিংটনের দাবি, রুশ সরকারের কাছ থেকে তেল কিনে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে পুতিন প্রশাসনকে সহায়তা করছেন নরেন্দ্র মোদি। যা যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থবিরোধী। অবশ্য ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের বিষয়ে আগস্টের শুরুতেই মোদি সরকারকে হুঁশিয়ার করেছিল ট্রাম্প প্রশাসন। তবে তাতে খুব একটা কর্ণপাত করেনি দিল্লি।

এদিকে, ট্রাম্প প্রশাসন আরোপিত ৫০ শতাংশ শুল্ক ও ভারত-যুক্তরাষ্ট্র ‘বাণিজ্য চুক্তি’ নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যেই মঙ্গলবার অর্থ ও বাণিজ্যমন্ত্রী, উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা ও দেশের নামীদামী অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে দিল্লিতে বৈঠকে করেছেন নরেন্দ্র মোদি।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সূত্র জানায়, ওই বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক বাজারে টিকে থাকা, দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার করা ও ভারতের অর্থনীতির চাকা সচল রাখার বিষয়ে বিকল্প পথ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
অন্যদিকে, জার্মান সংবাদপত্র ফ্রাঙ্কফুর্টার অলগেমেইনে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে মঙ্গলবার দাবি করা হয়, ভারতীয় পণ্যে শুল্ক আরোপের বিষয়ে কিছুটা নমনীয় হতে চেয়েছিলেন ট্রাম্প। তা নিয়ে আলোচনার জন্য সম্প্রতি তিনি প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে ফোনে কথা বলার জন্য অন্তত চার বার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু নয়াদিল্লি ট্রাম্পের আহ্বানে সাড়া দেয়নি।

যুক্তরাষ্ট্রের অতিরিক্ত শুল্ক প্রশ্নে ভারতীয় অবস্থান স্পষ্ট করেছেন নরেন্দ্র মোদি। তিনি কয়েক দফার বার্তায় পরিষ্কার জানিয়েছেন, এই শুল্ক-হুমকি দিল্লি মেনে নিচ্ছে না।
সোমবার রাতেও গুজরাটের অহমদাবাদের এক সভা থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, ‘যতই চাপ আসুক না কেন, আমরা তার মোকাবেলা করার জন্য চেষ্টা করে যাব। আমরা স্বনির্ভর ভারত গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, সে পথে আমরা অনেক দূর এগিয়েছি। আমাদের দেশ এখন শক্তিশালী দেশের তালিকায় সগর্বে দাঁড়িয়ে আছে।’