বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহতের ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানায় করা একটি হত্যা মামলায় কনটেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদির পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
সোমবার দুপুরে ঢাকার মহানগর হাকিম সারাহ্ ফারজানা হক এ আদেশ দেন।
এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক মো. এরফান খান এই কনটেন্ট ক্রিয়েটরকে আদালতে হাজির করে তার সাত দিনের রিমান্ড চান। এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দুই পক্ষের শুনানি শেষে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক।
বরিশালের বাংলাবাজার এলাকা থেকে রোববার রাতে তৌহিদ আফ্রিদিকে গ্রেপ্তার করে সিআইডির একটি বিশেষ দল।
আদালতে তৌহিদ আফ্রিদির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম।
রিমান্ড বাতিলের আবেদনে তিনি বলেন, ‘তৌহিদ আফ্রিদি আওয়ামী লীগের কেউ না। বাদী এফিডেভিট দিয়ে বলেছে, ভুল তথ্যে মামলায় তাদের আসামি করা হয়েছে। আসামি জামিন, অব্যাহতি বা খালাস পেলে তার আপত্তি নেই। ঘটনার সঙ্গে তার সম্পৃক্ততাও নেই।’
তবে কনটেন্ট ক্রিয়েটর আফ্রিদিকে ‘মিডিয়া সন্ত্রাসী’ হিসেবে আখ্যা করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মুহাম্মদ শামসুদ্দোহা সুমন বলেন, ‘আসামি ফেসবুক লাইভে এসে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগকে আন্দোলনকারীদের হত্যা করতে উৎসাহিত করেন। তাকে রিমান্ডে নিলে জানা যাবে কারা এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল।’
তৌহিদ আফ্রিদি বেসরকারি টেলিভিশন স্টেশন মাই টিভির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাসির উদ্দিন সাথীর ছেলে। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের কনটেন্ট তৈরি করছেন এবং তরুণদের মধ্যে তার জনপ্রিয়তাও রয়েছে।
যে মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সেটি হলো যাত্রাবাড়ীতে মো. আসাদুল হক বাবু হত্যা মামলা।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত বছরের ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ী এলাকায় জুলাই আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন মো. আসাদুল হক বাবু। দুপুর আড়াইটার দিকে আসামিদের ছোড়া গুলিতে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় গত বছরের ৩০ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা করেন নিহতের বাবা জয়নাল আবেদীন। এতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৫ জনকে আসামি করা হয়।
এই ২৫ জনের মধ্যে তৌহিদ আফ্রিদি ও তার বাবা নাসির উদ্দিন সাথীরও নাম রয়েছে।
তৌহিদ আফ্রিদির রিমান্ড চেয়ে পুলিশের আবেদনে বলা হয়েছে, ‘স্বৈরাচারীর পক্ষ নিয়ে কনটেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদি সেলিব্রেটি ও অন্যান্য কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের দিয়ে আন্দোলন বন্ধের জন্য প্ররোচিত করেন। যারা দ্বিমত পোষণ করেছে তাদের বিভিন্ন হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়েছেন।’
তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।