ঈদুল ফিতরে ঘরমুখী মানুষকে ভোগাতে পারে সড়কের যানজট। আর এমন ১৫৫টি সম্ভাব্য হটস্পট চিহ্নিত করে মাঠে নেমেছেন সংশ্লিস্টরা। যদিও এবার ঈদের লম্বা ছুটির কারণে যাত্রীদের চাপ ও দুর্ভোগ কম থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সবকিছু মিলিয়ে মহাসড়েকর যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে নানা প্রস্তুতি নিচ্ছে সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর এবং হাইওয়ে পুলিশসহ সংশ্লিষ্টরা।
বিভিন্ন সড়ক ও মহাসড়কের চলমান সংস্কার কাজ দ্রুত শেষ করার তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। ঈদযাত্রার আগে ও পরে ১০ দিন রাস্তার ওপর সব ধরণের নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। যানজট হতে পারে এমন সম্ভাব্য জায়গাগুলো বিশেষ নজরদারির আওতায় আনার সুপারিশ করা হয়েছে।
সম্প্রতি ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সড়ক ও রেলপথে যাত্রীদের যাতায়াত নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় সভায় এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
সভায় বলা হয়, জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে সারাদেশে যানজটের জন্য ১৫৫টি স্পট চিহ্নিত করা হয়েছে। তারমধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের আছে ৪৯টি স্পট। ঢাকা-উত্তরাঞ্চল মহাসড়কে আছে ৫৪টি স্পট। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে আছে ছয়টি স্পট। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে আছে ৪২টি স্পট। ঢাকা পাটুরিয়া-আরিচা মহাসড়কে আছে আটটি গুরুত্বপূর্ণ স্পট।
সভায় ঢাকা-টাঙ্গাইল এবং ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যানজটেরসম্ভবনার কথা বেশি আলোচনা হয়। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের অনেক জায়গায় খানাখন্দ আছে। এ ছাড়া ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে বাজার বসে যানজট সৃষ্টি হয়। লালমনিরহাট-বুড়িমারী দুই লেনের সড়কের অবস্থা খুবই শোচনীয়। ঈদের আগে মেরামত না করলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন লালমনিরহাট, টাঙ্গাইল নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসকরা।
জানতে চাইলে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান টাইমস অব বাংলাদেশকে বলেন, ঈদের ১০ দিন আগেই সব সংস্কার কাজ শেষ করা হবে। যাতায়াতের সুবিধার্থে চলমান কাজ বন্ধ রাখা হবে। আনফিট কোনো বাস সড়কে চলতে দেওয়া হবে না। সড়কে গাড়ি নষ্ট হয়ে গেলে যানজট দীর্ঘ হয়। সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়া হবে।
মহাসড়ক যানজটমুক্ত রাখার বিষয়ে প্রধান দায়িত্বে থাকা হাইওয়ে পুলিশ জানিয়েছে, ঈদের সময় মহাসড়কের বিভিন্ন স্পটে প্রায় ৭০০ পুলিশ সদস্য কাজ করবে। ৩৮/৩৯টি সড়কের অবস্থা খুবই খারাপ। যেগুলো দ্রুত মেরামত করা দরকার। আর যেসব জায়গায় যানজট হবে সেখানে অতিরিক্ত সদস্য থাকবে।
এসব বিষয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মঈনুল হাসান বলেন, সড়কের যেসব জায়গায় খানাখন্দ বা খারাপ আছে ঈদের আগেই সেখানে মেরামত কাজ শেষ হয়ে যাবে। এলেঙ্গা-রংপুর ফোরলেন খুলে দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। ঈদের আগে এটি খুলে দেওয়ায় উত্তরাঞ্চলের যাত্রায় ভোগান্তি কমবে।
এদিকে বাস টার্মিনালে পকেটমার, চুরি, মলম পার্টি বন্ধ করতে ঈদের সময় গুলিস্তান, ফুলবাড়িয়া, মহাখালী গাবতলী এবং সায়দাবাদ বাস টার্মিনাল এলাকায় সিসিটিভি বসানো হবে। এগুলোর জন্য একটি কমিটি করে দেওয়া হয়েছে।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উচ্চপর্যায়ের এক কর্মকর্তা টাইমস অব বাংলাদেশকে বলেন, গত বছর যেসব সমস্যা ছিল সেগুলোর বেশিরভাগ রয়ে গেছে। কিন্তু লম্বা ছুটির কারণে সড়কে একসঙ্গে মানুষের ঢল নামার সম্ভবনা কমছে। এতে যাত্রীদের ভোগান্তি কমবে। সমস্যাগুলো টের পাওয়া যাবে না।