নথি গায়েব করে ১৪৬ কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতির অভিযোগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর অঞ্চল-৫ এর উপকর কমিশনার লিংকন রায়কে সাময়িক বরখাস্ত করেছে সরকার। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) একটি মামলারও অনুমোদন দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানের সই করা এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বরখাস্তের আদেশে বলা হয়েছে, ঢাকায় কর অঞ্চল-৫ এর দায়িত্ব পালনকালে ধামসুর ইকোনমিক জোন লিমিটেডের ২০২০-২০২১ ও ২০২১-২০২২ করবর্ষের নিষ্পত্তিকৃত মামলায় নতুন করে আইটি-৩৯ ও আইটি-৮৮ আদেশপত্র জারি করে লিংকন রায় সরকারের ১৪৬ কোটি ৫৭ লাখ ৪৬ হাজার ৫৫৩ টাকা রাজস্ব ক্ষতি করেছেন।
এতে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় কার্যধারা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে এবং তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। বরখাস্তকালীন সময়ে তিনি বিধি অনুযায়ী খোরপোষ ভাতা প্রাপ্য হবেন।’
একই অভিযোগে দুদক ঢাকা কর অঞ্চল-৫ এর তৎকালীন কর কমিশনার আবু সাঈদ মো. মুস্তাক, অতিরিক্ত কর কমিশনার গোলাম কবীর এবং উপকর কমিশনার লিংকন রায়ের বিরুদ্ধে মামলা অনুমোদন দিয়েছে। শিগগিরই দুদকের সহকারী পরিচালক মিনহাজ বিন ইসলাম মামলা করবেন বলে জানিয়েছে একটি সূত্র।
দুদকের প্রতিবেদনে বলা হয়, ধামসুর ইকোনমিক জোন লিমিটেডের বিরুদ্ধে ২০২০-২১ ও ২০২১-২২ করবর্ষে মোট ১৪৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকার কর দাবির আদেশ হয়েছিল। কিন্তু কর্মকর্তা বদলির পর নতুন কর্মকর্তারা কর নির্ধারণী আদেশ পরিবর্তন ও পরিমার্জন করে দাবির পরিমাণ যথাক্রমে শূন্য টাকা ও এক হাজার টাকা নির্ধারণ করেন। এভাবে তারা রাজস্ব ফাঁকিতে সরাসরি সহায়তা করেছেন।
প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, শুধু আদেশ পরিবর্তন নয়, মূল কর নির্ধারণী নথিও গায়েব করে দেওয়া হয়, যা দুদকের অভিযানে উদ্ধার করা যায়নি।
গত ৯ জুলাই নথিপত্র গায়েব করে এনবিআর কর অঞ্চল-৫ থেকে ১৪৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকার কর ফাঁকির ঘটনায় এনফোর্সমেন্ট অভিযান চালায় দুদক। অভিযানেও অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়।