বেরোবিতে ছাত্র সংসদের দাবিতে এখনো অনড় ৮ শিক্ষার্থী

টাইমস ন্যাশনাল
3 Min Read
ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে আমরণ অনশনে রংপুরের বেরোবির শিক্ষার্থীরা। ছবি: সংগৃহীত
Highlights
  • সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা বিভাগের সহকারী পরিচালক এহতেরামুল হকের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ছাত্র সংসদ গঠনের ব্যাপারে বর্তমান প্রশাসনও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একমত।

ছাত্র সংসদের দাবিতে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরুর ৩৬ ঘণ্টা পর উপাচার্যের বিবৃতির পর অনশন ভেঙেছেন দুজন শিক্ষার্থী। তবে বাকিরা অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।

সোমবার রাতে সাংবাদিকদের সামনে অনশন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন ওই দুজন শিক্ষার্থী। তারা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিবলি সাদিক ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের মুশফিকুর রহমান।

অনশন প্রত্যাহারের ঘোষণা নিয়ে এই দুই শিক্ষার্থীর সঙ্গে অন্য আন্দোলনকারীদের হট্টগোল হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক শামসুর রহমান এই দুজনকে শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত উল্লেখ করে এটি তাদের সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত কি না জানতে চান।

শিবলি সাদিক বলেন, ‘৩৬ ঘণ্টা থেকে আমরণ অনশন করছিলাম। আমরা চাচ্ছিলাম, ছাত্র সংসদ নির্বাচনের রোডমাপের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিবৃতি দিক। উপাচার্য বিবৃতি দিয়েছেন। ১০ কার্যদিবসের সময় চেয়েছেন তিনি। আমি এটার সঙ্গে একমত।’

‘ভিসির পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি এসেছে। এটা আমাদের জন্য আশাব্যঞ্জক। আশা করব, ১০ কার্যদিবসের মধ্যে এটা বাস্তবায়ন করা হবে,’বলেন মুশফিকুর রহমান।

রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের উত্তর ফটকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ১০ শিক্ষার্থী আমরণ অনশনে বসেন। তাদের অভিযোগ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে ছাত্র সংসদের বিষয়টি নেই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ছাত্র সংসদ বাবদ ফি নেওয়া হয়েছে।

শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় আইন সংশোধন করে একটি সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করে ২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন।

ছাত্র সংসদ নির্বাচনকে শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি উল্লেখ করে ১০ কার্যদিবসের সময় চেয়েছেন উপাচার্য শওকাত আলী।

সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা বিভাগের সহকারী পরিচালক এহতেরামুল হকের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ছাত্র সংসদ গঠনের ব্যাপারে বর্তমান প্রশাসনও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একমত।

ছাত্রদের সমস্যাগুলো নিয়ে কথা বলার জন্য নির্বাচিত প্রতিনিধিরা বেরিয়ে আসুক, তারা নেতৃত্ব দিক; বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটা বিশ্বাস করে, বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ছাত্র সংসদের বিষয়টি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে নেই। তবে বর্তমান প্রশাসন দায়িত্ব নেওয়ার পর ১০৮তম সিন্ডিকেট সভায় ছাত্র সংসদ গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে। ছাত্র সংসদের নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া অর্থ একটি ব্যাংক হিসাব খুলে জমা রাখা হয়েছে, যাতে ভবিষ্যতে সেটা শুধু ছাত্র সংসদের জন্যই খরচ করা যায়।

এর আগে ছাত্র সংসদের গঠনতন্ত্র প্রণয়নের জন্য উপাচার্য একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছিলেন। কমিটির সদস্যরা চারটি বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে গঠনতন্ত্র সংগ্রহ করে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ এবং তিনটি আবাসিক হলের জন্য আলাদা করে ছাত্র সংসদের জন্য একটি গঠনতন্ত্র প্রস্তুত করেছেন। সেটা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে পাঠানো হয়েছে।

গঠনতন্ত্রটি এখন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের মাধ্যমে ৩০ জুলাই গঠিত সাত সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ কমিটির কাছে যাচাই–বাছাই ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যে রয়েছে। এখান থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হয়ে গঠনতন্ত্রটি রাষ্ট্রপতির কাছে যাবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, নিয়ম অনুযায়ী এ গঠনতন্ত্রটি বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর বা রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর সরকারি গেজেট আকারে প্রকাশিত হবে। তারপর সেটার আলোকে তফসিল ঘোষণা করা হবে। ছাত্র সংসদ নির্বাচন আয়োজন করার আগে ছাত্র সংসদের গঠনতন্ত্র প্রণয়নের এসব ধাপ পর্যায়ক্রমে অতিক্রম করতে হয়।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *