সুনামগঞ্জ-সিলেট মহাসড়কের বাহাদুরপুর এলাকায় বাস ও সিএনজি চালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই শিক্ষার্থীসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। এ দুর্ঘটনায় আরও দুজন আহত হন, যাদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বুধবার দুপুরের দিকে দুর্ঘটনাটি ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সিলেটগামী একটি যাত্রীবাহী বাস বাহাদুরপুর এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি সিএনজির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে সিএনজির সামনের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে যায়।
নিহতরা হলেন-শান্তিগঞ্জ টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আফসানা জাহান খুশি। তিনি সুনামগঞ্জ শহরের আরপিননগর এলাকার বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেনের মেয়ে। অন্য শিক্ষার্থী স্নেহা চক্রবর্ত্তী (১৮)। তিনি সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি কার্যক্রম শেষ করে সুনামগঞ্জ শহরের বাসায় ফিরছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি শান্তিগঞ্জ উপজেলার জয়কলস গ্রামে। এ ছাড়া শফিকুল ইসলাম (৫০) নামের আরও একজন সিএনজি যাত্রী নিহত হয়েছেন। তিনি শহরের আলীপাড়ার বাসিন্দা।
সিএনজির চালক আব্দুর রশিদকে (বসিয়া খাউরি গ্রামের বাসিন্দা) গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। আহত অপর যাত্রীর অবস্থাও গুরুতর বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাহাদুরপুর এলাকায় সুনামগঞ্জ থেকে সিলেটগামী বাস (নম্বর সিলেট ব-১১-০১১১) এবং সুনামগঞ্জগামী সিএনজি মুখোমুখী সংঘর্ষ হয়। দ্রুতগামী বাসটি উল্টোসাইডে গিয়ে সিএনজিকে আঘাত করে। এ সময় সিএনজি যাত্রীরা হতাহত হন। আহত যাত্রীর নাম সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার লালারচর গ্রামের ঐশী রানী পাল (১৮)। তিনি বিনয় ভূষণ পালের মেয়ে। অন্যজন জেলার শান্তিগঞ্জ উপজেলার বসিয়া খাউরি গ্রামের বাসিন্দা রমজান আলীর ছেলে সিএনজিচালক রশিদ আহমেদ।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ পরিচালনা করে। স্থানীয় পলিশ জানায়, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বেপরোয়া গতির জন্যই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। তদন্তের পর বিস্তারিত বলা যাবে।
দুই তরুণ শিক্ষার্থীর অকাল মৃত্যুতে এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতেও চলছে শোক কর্মসূচি।
পুলিশ জানায়, দুর্ঘটনার পর বাহাদরপুর এলাকায় সড়কের আশপাশের শত শত মানুষ এসে জড়ো হওয়ায় বেশ কিছুক্ষণ যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। আহতদের সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘নিহতদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহতদের সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘাতক বাসটিকেও আটক করা হয়েছে। চালক ও হেল্পারকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’
