রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করছে শিক্ষার্থীরা। নিহত ও আহতদের সঠিক তথ্য প্রকাশসহ ছয় দফা দাবিতে তারা অবস্থান নিয়েছে।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ও শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার কলেজ পরিদর্শনে গেলে শিক্ষার্থীরা তাদের ঘিরে ধরে এবং স্লোগান দিতে থাকে।
পরে উপদেষ্টারা কলেজের ৫ নম্বর ভবনের নিচতলার কনফারেন্স কক্ষে শিক্ষকদের সঙ্গে অবস্থান নেন। সেখানে পাঁচ থেকে সাতজন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসে। তবে কনফারেন্স রুমের বাইরে শত শত শিক্ষার্থী বিক্ষোভ চালিয়ে যায়।
শিক্ষার্থীরা দাবি জানায়, নিহতদের সঠিক নাম ও পরিচয় প্রকাশ, আহতদের নির্ভুল তালিকা, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ক্ষতিপূরণ, ঝুঁকিপূর্ণ ও পুরোনো প্রশিক্ষণ বিমান বাতিল এবং নিরাপদ আধুনিক বিমান চালু করতে হবে।
সকাল ৯টায় শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দেয়। তবে সকাল সোয়া ৯টার দিকে দিয়াবাড়ি আর্মি ক্যাম্প থেকে মাইকিং করে জানানো হয়, গোলচত্বর ও আশপাশের এলাকায় কোনও সভা, সমাবেশ, বা অবস্থান কর্মসূচি পালন করা যাবে না।
এদিকে কলেজ ও আশপাশে সাধারণ মানুষের ভিড় লক্ষ করা গেছে। কেউ কেউ নিখোঁজ স্বজনকে খুঁজছেন, আবার অনেকেই কৌতূহলবশত ঘটনাস্থলে আসছেন।
স্কুলের নিরাপত্তাকর্মী আমির হোসেন বলেন, ‘ভোর থেকে লোকজন ভিড় করছেন। সবাইকে অনুরোধ করছি, শুধু দেখে যেন চলে যান। ভিড় না করেন।’
সকাল থেকেই আবাসিক হোস্টেলের শিক্ষার্থীদের পরিবার এসে সন্তানদের নিয়ে যাচ্ছেন। বিমান যে ভবনে বিধ্বস্ত হয়েছে, তার পেছনের হায়দার আলী হোস্টেল থেকেও শিক্ষার্থীদের হোস্টেল ছাড়তে দেখা গেছে।
এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক কবির আহমেদ বলেন, ‘দুপুরে খবরটা শুনে আঁতকে উঠেছিলাম। পরে জানতে পারি, ছেলে ভালো আছে।’
স্কুলের এক শিক্ষক আফরিন জানান, বিধ্বস্ত ভবনটি মূলত প্রাথমিক শাখার শ্রেণিকক্ষ হিসেবে ব্যবহৃত হতো। তিনি বলেন, ‘সেখানে ঠিক কোন ক্লাসের কতজন শিক্ষার্থী ছিল, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।’
সোমবার দুপুর ১টার কিছু পরে বিমান বাহিনীর একটি এফ-৭ বিজিআই প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান উত্তরার দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বিধ্বস্ত হয়।
এ ঘটনায় অন্তত ২৭ জন নিহত হন এবং দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মচারী ও অভিভাবক আহত হয়েছেন।
মর্মান্তিক এই ঘটনার পর আজ মঙ্গলবার এক দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে সরকার।