গোপালগঞ্জে নির্বিচারে ‘গণগ্রেপ্তারে’র সমালোচনা করা হয়েছে রাজধানীতে অনুষ্ঠিত ‘জুলাই কারাবন্দীদের স্মৃতিচারণ’ শীর্ষক আলোচনা সভা থেকে।
রোববার বাংলাদেশ আইনজীবী অধিকার পরিষদ আয়োজিত এই সভায় গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান প্রশ্ন তোলেন, ‘কাদের খুশি করতে এই ”গণগ্রেপ্তার“ করা হচ্ছে?’
তিনি বলেন, ‘দলীয় সূত্রে তথ্য পেয়েছি, গোপালগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা কেউ এলাকায় নেই। আশপাশের জেলায় পালিয়ে গেছে। তারপরও গণগ্রেপ্তার চলছে। শিশুদেরও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এসব বন্ধ করুন।’
এক বছরেও দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক করতে না পারায় সরকারের সমালোচনাও করেন তিনি। অভ্যুত্থানের এক বছর হয়ে গেলেও পুলিশ ও প্রশাসনের কোনো সংস্কার হয়নি বলেও অভিযোগ করেন নেতারা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর বলেন, ‘পুলিশ বদলায়নি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা যাতে সরকারের ক্যাডার বাহিনীতে পরিণত না হয়, সেজন্য সংস্কার করতে হবে। এই সংস্কারটা গুরুত্বপূর্ণ।’
আমার বাংলাদেশ পার্টির চেয়ারম্যান মুজিবর রহমান মঞ্জু বলেছেন, ‘আগেও আওয়ামী লীগের পতন হয়েছে। প্রতিবার পুনরুত্থান সম্ভব হয়েছে বিএনপি ও জামায়াতের ভুলের কারণে।’
ছাত্রদলের সহসভাপতি এইচ এম আবু জাফর বলেন, ‘জুলাই একদিনে আসেনি। দীর্ঘ ১৬ বছরের লড়াই সংগ্রামে অনেক নেতাকর্মীর প্রাণ গেছে। দীর্ঘ নিপীড়নের পুঞ্জিভূত ক্ষোভ থেকে মানুষ ছাত্রদের আন্দোলনে যুক্ত হয়। ফলে এটি গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়। তাই জুলাই নিয়ে কারো এককভাবে ঠিকাদারি করার সুযোগ নেই।’
গণ অধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ বলেন, ‘অভ্যুত্থানে আহত-নিহতদের স্বীকৃতি হয়েছে। কিন্তু কারাবন্দীদের কোনো স্বীকৃতি হয়নি এখনো।’
এ সময় ছাত্রদের ‘ক্রেডিটবাজি’র রাজনীতি এবং রাজনৈতিক দলের নেতাদের ত্যাগকে অস্বীকার করার প্রবণতা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান বক্তারা।
তারা বলেন, ‘ছাত্ররা যখনই আক্রান্ত হয়েছে, রাজনীতিবিদরা পাশে ছিল। রাজনৈতিক দলগুলো ইতিবাচকভাবে সাড়া দিয়েছে বলেই অভ্যুত্থান সফল হয়েছে। এখন এই পরিবর্তনটাকে টেকসই করার জন্য গঠনমূলক রাজনীতি করতে হবে।’
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন গণ অধিকার পরিষদের মুখপাত্র ফারুক হাসান, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মঞ্জুর মোর্শেদ মামুন, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আবদুর রহমান, ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান প্রমুখ।