অবিরাম বর্ষণে উজান থেকে নেমে আসছে ঢলের পানির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে পদ্মার স্রোত। ভাঙন দেখা দিয়েছে নদী তীরবর্তী এলাকাগুলোতে। হুমকির মুখে পড়েছেন পাবনার সুজানগর উপজেলার নাজিরগঞ্জ ফেরিঘাট। ইতোমধ্যেই নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে বেশকিছু এলাকা। বসতবাড়ি হারানোর আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে নদীপাড়ের বাসিন্দাদের মাঝে।
মঙ্গলবার সরেজমিন দেখা যায়, নাজিরগঞ্জ ফেরিঘাটের পূর্ব পাশের ফেরি পল্টনের নিচ থেকেই পাড় ভেঙে নদীতে পড়ছে। ফেরিঘাট থেকে কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত এই ভাঙন চলছে। ফেরির মেইন প্লাটুনের মাত্র কয়েক হাত দূর থেকে এই ভাঙন শুরু হয়েছে। নদীর তীর ঘেঁষে কয়েক গজ দূরেই জনবসতি। মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু হারানোর আতঙ্ক ভর করেছে স্থানীয়দের মাঝে।
নদীপারের বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম ও আবুল কাশেম শেখ বলেন, ‘নদীর পশ্চিম পাশে বড় বড় ব্লক দিয়ে নদীর তীর রক্ষা করা হয়েছে। অথচ পূর্বপাশে কোনো ধরনের ব্লক নেই। কয়েক বছর ধরেই ভাঙছে, কিন্তু এবারের ভাঙনটা তীব্র মনে হচ্ছে।’

স্থানীয়দের অভিযোগ, শুষ্ক মৌসুমে নদী শাসন না করা এবং নদী রক্ষায় ব্যবস্থা না নেয়ার ফলেই এই দুর্দশা দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া ঘাটের দুই পাশের কয়েক কিলোমিটারের মধ্যে অবৈধ বালুমহল রয়েছে। অপরিকল্পিতভাবে এই বালু উত্তোলনের কারণেও এই ভাঙন হচ্ছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
নাজিরগঞ্জ ফেরি ঘাটের এই অবস্থার জন্য প্রশাসনকে দায়ী করলেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) নাজিরগঞ্জ ঘাটের পোর্ট অফিসার তোফাজ্জল হোসেন।
তিনি বলেন, ’চুক্তি অনুযায়ী ২০২৩ সালে আমাদেরকে ঘাটের জমি বুঝিয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও এখনো ইউএনও বা ডিসি সাহেব আমাদের সেটা দেননি। এজন্য আমরা ঘাটের কোনো উন্নয়ন করতে পারছি না। এভাবে আর কিছুদিন গেলে তো ঘাট ই নদীগর্ভে তলিয়ে যাবে।’
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সুজানগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মীর রাশেদুজ্জামান রাশেদ বলেন, ‘ভাঙন ঠেকাতে জরুরি ভিত্তিতে কাজ করতে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।’