ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ওয়াশিংটনে বৈঠক করেছেন। নেতানিয়াহুর এটি তৃতীয় যুক্তরাষ্ট্র সফর হলেও ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে এটি দু’জনের প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক।
বিসিসির খবরে বলা হয়, ২১ মাসের রক্তক্ষয়ী সংঘাতের পর গাজা যুদ্ধবিরতির নতুন সম্ভাবনার প্রেক্ষাপটে দুই শীর্ষ নেতার মধ্যে এ বৈঠক হলো।
এর আগে ট্রাম্প সাংবাদিকদের জানান, গাজা যুদ্ধ অবসানে তিনি নেতানিয়াহুকে ‘খুব কঠোরভাবে’ বলেছেন এবং আশা প্রকাশ করেন, ‘এই সপ্তাহেই একটি চুক্তি হবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি বিনিময় পরিকল্পনা নিয়ে কাতারে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যকার পরোক্ষ আলোচনা রোববার রাতে ফের শুরু হয়েছে। তবে এখনও মূল মতবিরোধগুলোর সমাধান হবে কিনা, তা স্পষ্ট নয়।
যুদ্ধে বিপর্যস্ত গাজাবাসী ও হামাসের হাতে বন্দি থাকা ইসরায়েলিদের আত্মীয়রা কেবলমাত্র ‘আশাবাদ’ প্রকাশ করছেন।
উত্তর গাজার বেইত লাহিয়া থেকে সন্তান-নাতিদের নিয়ে গাজা শহরে পালিয়ে আসা নাবিল আবু দায়াহ বলেন, ‘আমি কেবল যুদ্ধবিরতি চাই না, চাই পুরোপুরি যুদ্ধের অবসান। সত্যি বলতে কি, ৬০ দিন পর আবার যুদ্ধ শুরু হবে—এই ভয়টাই বড়।’
শনিবার সন্ধ্যায় তেলআবিবে বিশাল বিক্ষোভে প্রায় ৫০ জন বন্দিকে ফিরিয়ে আনার চুক্তি করার আহ্বান জানায় সাধারণ মানুষ। কেউ কেউ প্রশ্ন তোলেন, কেন সব বন্দিকে একসঙ্গে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে না?
জেরুজালেমে এক জনসভায় ইলায় ডেভিড বলেন, ‘এটাই সময় জীবনের জন্য লড়ার। এটা সেই মুহূর্ত, যখন সব বন্দিকে—একজনও বাদ না দিয়ে—ফিরিয়ে আনার জন্য পূর্ণাঙ্গ চুক্তি করতে হবে।’
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানে হামলা ও জনসমর্থন বৃদ্ধির পর নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক সুবিধা বেড়েছে এবং গাজা যুদ্ধের অবসানে তার এখন বেশি কূটনৈতিক সুযোগ রয়েছে।
হামাসের পৃষ্ঠপোষক ইরান আক্রান্ত হওয়ায়, হামাসও আপসের দিকে ঝুঁকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এছাড়া ট্রাম্প দ্রুত মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য ইস্যু—ইসরায়েল-সিরিয়া সীমান্ত, সৌদি-ইসরায়েল সম্পর্ক এবং ইরানের সঙ্গে সম্ভাব্য নতুন পারমাণবিক চুক্তির দিকে মনোযোগ দিতে চাচ্ছেন।