লক্ষ্য ২৪৫ রান। সেটা তাড়া করতে নেমে স্কোরবোর্ডে ১০০ রানে ১ উইকেট। মাঝারি লক্ষ্যের এই ম্যাচ জিততে এরচেয়ে ভালো ভিত বাংলাদেশ পেত কিনা, সেই প্রশ্ন করাই যায়। কিন্তু এরপরও ম্যাচ ন্যুনতম লড়াইটা দেখা গেল না বাংলাদেশের ব্যাটারদের কাছ থেকে। বরং অদ্ভুতুড়ে এক ব্যাটিং ধসে মাত্র ৫ রানে পড়ল ৭ উইকেট। ব্যাখাতীত এই ব্যাটিং ব্যর্থতায় প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে বাংলাদশ গুটিয়ে গেল ১৬৭ রানে। নতুন অধিনায়কেও বদলাল না ভাগ্য। মিরাজের ওয়ানডে অধিনায়কত্ব শুরু হলো ৭৭ রানের হারে।
তানজিদ তামিমের ফিফটির পর নাজমুল হোসেন শান্তর ২৫ আর জাকের আলী অনিকের মান বাঁচানো ব্যাটিং; এক লাইনে বাংলাদেশের ব্যাটিং হাইলাইটস। কারণ ১৭ তম ওভারে রান আউটে শান্তর বিদায়ের পর যা হয়েছে সেটাকে অদ্ভুত নাকি ব্যাটারদের দায়িত্বজ্ঞানহীনতার উদাহরণ বলবেন, সেটা নিয়েই বরং তর্ক-বিতর্ক হতে পারে। নইলে রান তাড়ায় নেমে ভালো একটা অবস্থানে থাকার পর নিশ্চয়ই এভাবে উইকেট দিয়ে আসেন না!
তাসকিন আহমেদ, তানজিম হাসান সাকিব কিংবা তানভীর ইসলামের মতো টেইলএন্ডারদের কাছ থেকে না হয় ব্যাট হাতে খুব বেশি পাওয়ার কিছু নেই। কিন্তু শান্ত, লিটন দাস, তাওহিদ হৃদয় কিংবা অধিনায়ক মিরাজের যে দায়িত্ব, তারা সেটা পালন করবেন এই প্রত্যাশার বিপরীতে ফুটে উঠল অবহেলা। যারা নেট কিংবা ঘরোয়া ক্রিকেটে সারাবছর স্পিনারদের খেলেন, তাদের সামনেই লংকান দুই স্পিনার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা আর কামিন্দু মেন্ডিস হয়ে উঠলেন অতিমানবীয়। যে চক্রব্যুহে আটকে একের পর এক ব্যর্থ হয়েছেন লিটন-হৃদয়-মিরাজরা।
এই ব্যর্থতার মিছিলে জয় সম্ভব না জেনেও একাই লড়ে গেছেন উইকেটে শেষ পর্যন্ত থাকা জাকের। হাসারাঙ্গার বলে শেষ ব্যাটার হিসেবে আউট হওয়ার আগে চারটি করে চার ও ছক্কায় তৃতীয় ওয়ানডে ফিফটি ছোঁয়া এই ডানহাতি ব্যাটার করেছেন ৬৪ বলে ৬১ রান।
ইনিংসের ১৭তম ওভারে্র তৃতীয় বলে রান আউট হলেন শান্ত। থিকশানার করা অফস্টাম্পের বাইরের বলে মিড উইকেটে ঠেলে এক রানের জন্য দৌড়ান শান্ত। নন স্ট্রাইকিং এন্ডে পৌঁছেই ছুটতে থাকেন দুই রানের জন্য। সেটাই কাল হলো তার। থারিন্দু রথনায়েকের থ্রো থেকে উইকেট ভেঙে দেন কুশাল মেন্ডিস। থার্ড আম্পায়ারের রিপ্লেতে দেখা যায় উইকেট ভাঙার আগে অল্পের জন্য পপিং ক্রিজে পৌঁছাতে পারেননি শান্ত।
এরপরই যেন মড়ক লাগল বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডারে। চারে নামা লিটন টিকলেন চার বল। রানের খাতা খোলার আগেই এলবিডব্লিউ হন হাসারাঙ্গার বলে। একই ওভারের পঞ্চম বলে দারুণ খেলতে থাকা তানজিদ হাসান ক্যাচ দিলেন মিড অফে লিয়ানাগের হাতে। চতুর্থ ফিফটিকে টেনে নিতে পেরেছেন ৬২ পর্যন্ত। পরের ওভারে কামিন্দুর আর্ম বলে বোল্ড ১ রান করা হৃদয়। ২০-০তম ওভারে আবার বোলিংয়ে ফিরেই হাসারাঙ্গার বাজিমাৎ। এই লেগির গুগলিটা ঠিকঠাক পড়তে পারেননি মিরাজ, লাইন মিস করায় বল লাগে প্যাডে। জোরালো আবেদনে আউট দেন আম্পায়ার। রিভিউ নিয়েও বদলায়নি মিরাজের ভাগ্য। পরের ওভারে কামিন্দুর দুই শিকার টেইলএন্ডার তানজিম সাকিব ও তাসকিন। ৭.৫ ওভার বল করে দুই মেইডেন সহ মাত্র ১০ রানে চার উইকেট নেন হাসারাঙ্গা। পাঁচ ওভারে ১৯ রান দিয়ে তিন উইকেট কামিন্দুর।
এর আগে তাসকিন-সাকিবের বোলিং তোপ সামলে অধিনায়ক চারিথ আসালাঙ্কার সেঞ্চুরিতে ২৪৪ রানের সংগ্রহ পায় শ্রীলংকা।
বিস্তারিত আসছে…