মাদকাসক্তদের জন্য বিভাগীয় পর্যায়ে পৃথক কারাগার নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মো. হাসান মারুফ বক্তব্য রাখেন।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘যেকোনো দেশের উন্নতির প্রধান নিয়ামক হলো কর্মক্ষম বিপুল যুবশক্তি। ভবিষ্যতে উন্নত এবং সফল রাষ্ট্রের কাতারে উপনীত হতে হলে আমাদের এ তরুণ সমাজকে মাদক থেকে অবশ্যই মুক্ত রাখতে হবে।’
‘দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষই নানাভাবে মাদকের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। আমাদের দেশে মাদক চোরাচালানের একটি ভয়াবহ বিষয় হলো নারী, শিশু এবং কিশোরদের এ গর্হিত কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে তাদের মধ্যে অপরাধপ্রবণতা যেমন বাড়ছে তেমনই তাদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে।’
সস্প্রতি সাতটি বিভাগীয় শহরে ১৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে সাতটি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের নির্মাণ প্রকল্প একনেকে অনুমোদিত হয়েছে বলে জানান উপদেষ্টা।

মাদক সমস্যা সমাধানের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একযোগে কাজ করে যাচ্ছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নতুন সিনথেটিক ও সেমি-সিনথেটিক ড্রাগসের আবির্ভাবের ফলে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারজনিত সমস্যা আরও ঘনীভূত হয়েছে।’
‘মাদকের করাল গ্রাস থেকে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করতে বর্তমান সরকার প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। নতুন নতুন এসব মাদক নিয়ে আমাদেরকে নতুনভাবে কর্মকৌশল তৈরি করতে হচ্ছে। নতুন ধরনের মাদক সম্পর্কে দেশের সব আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও গোয়েন্দা সংস্থা সজাগ রয়েছে এবং এগুলোর বিস্তার রোধে উদ্যোগ গ্রহণ অব্যাহত রয়েছে।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, প্রায় ১৮ কোটি জনসংখ্যার দেশে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে বর্তমানে নিয়োজিত রয়েছে ২ হাজার ৯৪৩ জন। এর মধ্যে এনফোর্সমেন্টে নিয়োজিত রয়েছেন ১ হাজার ৬২২ জন। ৬৪ টি জেলা কার্যালয়, ১টি বিশেষ জোন, ৮টি বিভাগীয় গোয়েন্দা কার্যালয় এবং ৮টি বিভাগীয় কার্যালয়ের সহযোগীতায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর দেশব্যাপী কার্যক্রম পরিচালনা করছে।