শুভ জন্মদিন স্যার

টাইমস রিপোর্ট
3 Min Read
ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর ৯০তম জন্মদিন। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর ৯০তম জন্মদিন সোমবার। তিনি দেশবরেণ্য শ্রদ্ধেয় বুদ্ধিজীবী। বিশাল ব্যক্তিত্বের অধিকারী সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী একাধারে খ্যাতনামা ইংরেজি সাহিত্য শিক্ষক, প্রাবন্ধিক, সম্পাদক, কলাম লেখক, সাহিত্য ও সংস্কৃতি সমালোচক এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক।

তিনি আজও অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং শিক্ষাক্ষেত্রে স্বায়ত্তশাসনের পক্ষে দৃঢ় অবস্থানে আছেন। তার কণ্ঠস্বর শ্রেণিকক্ষে যেমন, তেমনি সাধারণেল মাঝেও প্রভাব ফেলেছে- গড়ে তুলেছে বহু প্রজন্মের শিক্ষার্থী, লেখক ও কর্মীদের।

মার্কসবাদে বিশ্বাসী এই অধ্যাপক রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন এবং সাংস্কৃতিক ও পরিবেশগত লুটপাটের বিরুদ্ধে বরাবরই সরব থেকেছেন। ভূমি দখল, নদী দূষণ, বন উজাড় ও ঐতিহাসিক স্থান বাণিজ্যিকীকরণের বিরুদ্ধেও তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন।

তার জন্মদিন উপলক্ষে সোমবার বাংলা একাডেমিতে ‘১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ও জাতীয়তাবাদের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও নাট্য প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। যেখানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী।

১৯৩৬ সালের ২৩ জুন বিক্রমপুরে জন্মগ্রহণ করেন সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি পড়াশোনা করেছেন ঢাকার সেন্ট গ্রেগরি স্কুল, নটর ডেম কলেজ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনি ইংরেজি সাহিত্যে উচ্চতর গবেষণা করেছেন যুক্তরাজ্যের লিডস এবং লেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দে পড়াশোনা শেষে দেশে ফিরে এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেট তাকে দু’বার উপাচার্য মনোনীত করলেও তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। সম্পাদনা করেছেন ‘পরিক্রমা’, ‘সাহিত্যপত্র’, ‘সচিত্র সময়’, ‘সাপ্তাহিক সময়’, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পত্রিকা’, ‘ঢাকা ইউনিভার্সিটি স্টাডিস’ প্রভৃতি।

জাতির অন্যতম বাতিঘর তিনি। শিক্ষা, সংস্কৃতি, বাকস্বাধীনতা, মানবাধিকার পরিবেশ সুরক্ষা, দুর্নীতি প্রতিরোধ এবং সামাজিক ন্যায়বিচার আন্দোলনের পুরোধা তিনি। ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী আমাদের মনন জগতে তার ক্ষুরধার লেখনির মাধ্যমে সবসময় ভাস্বর।

কালের সাক্ষী, নেতা জনতা ও রাজনীতি, পুঁজিবাদেও দুঃশাসন, গণতন্ত্রেণর অমসৃণ পথ, রাষ্ট্র ও সংস্কৃতি, রবীন্দ্রনাথ রবীন্দ্রনাথের মতোই, সময় বহিয়া যায়, বিচ্ছিন্নতায় অসম্মতি, কুমুর বন্ধন, শরৎচন্দ্র ও সামন্তবাদ, বঙ্কিমচন্দ্রের জমিদার ও কৃষক, নজরুল ইসলামের সাহিত্যজীবন, শেকসপিয়রের মেয়েরা, ধ্রুপদী নায়িকাদের কয়েকজন, ইংরেজি সাহিত্যে ন্যায়-অন্যায়, বাঙালির জাতীয়তাবাদ এবং জাতীয়তাবাদ, সাম্প্রদায়িকতা ও জনগণের মুক্তি, হোমারের ওডিসি, এ্যারিস্টটলের কাব্যতত্ত্ব, ইবসেনের বুনোহাঁস, হাউসম্যানের কাব্যের স্বভাব অম্বেষণ, দ্বিতীয় ভুবন, নিরাশ্রয় গৃহী, আরণ্যক দৃশ্যাবলী, অনতিক্রান্ত বৃত্ত ইত্যাদি তার রচনা। পেয়েছেন নানা কাজের স্বীকৃতিও। তার প্রাপ্ত পুরস্কারের মধ্যে রয়েছে, লেখক সংঘ পুরস্কার, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, একুশে পদক ও আবদুর রহমান চৌধুরী পদক।

তিনি তার অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ একুশে পদক, বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারসহ বহু পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। ২০২২ সালে বাংলা একাডেমি ‘নজরুল পুরস্কার’ পান তিনি।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *