যশোরের এক বৃক্ষপ্রেমী নিজ উদ্যোগে ১৭ বছরে ৩৫ হাজার গাছের চারা রোপণ করেছেন। ঠিকাদারি ব্যবসার পাশাপাশি নিজের টাকায় তিনি ছায়া ও ফলজবৃক্ষে ভরে তুলছেন গ্রামের পর গ্রাম।
তার নাম আনোয়ার হোসেন সাগর। ২০০৯ থেকে নিজের গ্রামেই লেবুগাছ রোপণ করে বৃক্ষরোপণ শুরু করেন সাগর। সেই শখই একসময় পরিণত হয় নেশায়।
সেই ধারাবাহিকতায় যশোরের ভৈরব নদের পাড়ে রোববার সকালে বিভিন্ন ফলজ, ঔষধি ও বনজ মিলিয়ে আরও সাড়ে ৬শ’ গাছের চারা রোপণ করেছেন তিনি। এসব গাছের মধ্যে ছিল খেজুর, নীল কৃষ্ণচূড়া, জাপানি কেসিয়া, পলাশ, ডাউফল, শিমুল, সোমরাইল ফুল, জারুল ও কাঞ্চন। এদিন শুধু তিনি গাছই লাগাননি, তার এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীদের মাঝেও ৫০টি চারা বিলিয়েছেন। তার বৃক্ষরোপণ শুধু নিজের গ্রামেই সীমাবদ্ধ নয়।
সাগর বলেন, ‘মানুষ নির্বিচারে গাছ কাটছে। এই সবুজ ধ্বংস ঠেকানো না গেলে আমাদের ভবিষ্যৎ বিপন্ন হবে।’ সবুজ ধ্বংস ঠেকানোর স্বপ্ন বাস্তবায়নে তিনি এখন গ্রাম ছেড়ে শহরে এবং এরপর হাইওয়েতে গাছ লাগানোর পরিকল্পনা করছেন।

এই কাজের পেছনে মূল প্রেরণা জানতে চাইলে সাগর বলেন, নিজের টাকা দিয়েই আমি বৃক্ষরোপণ করি। এটি কোনো ব্যবসা নয়, বরং আমার নেশা। আমার গ্রাম লেবুতলা, কিন্তু একসময় লেবুগাছ ছিল না। এটা আমায় খুব কষ্ট দিত। এখন আমার হাতে লাগানো গাছগুলো যখন বড় হচ্ছে, তখন মনে হচ্ছে আমি জীবনের নতুন অর্থ খুঁজে পেয়েছি।
সাগরের রোববারের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন যশোর জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আছাদুজ্জামান।
তিনি বলেন, ‘আনোয়ার হোসেনের এই নিঃস্বার্থ উদ্যোগ স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। তার এই প্রচেষ্টা প্রমাণ করে যে একজন ব্যক্তি চাইলে সমাজের জন্য কতটা ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে। তার সবুজ বিপ্লব শুধু গাছ নয়, বরং প্রকৃতি ও মানুষের মধ্যে ভালোবাসার এক নতুন সম্পর্ক গড়ে তুলছে।’