পিলখানা হত্যাকাণ্ড, গুম-খুন-আয়নাঘর, শাপলা চত্বর হত্যাযজ্ঞ এবং ভোট ডাকাতিসহ শেখ হাসিনার ১৬ বছরের দুঃশাসনের পুরো চিত্রই ঐতিহাসিক তথ্য আকারে উপস্থাপন করা হবে জুলাই স্মৃতি জাদুঘরে।
শনিবার বিকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এক বৈঠকে জাদুঘর নির্মাণ কর্তৃপক্ষ প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে এ তথ্য জানায়।
সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী প্রধান উপদেষ্টাকে জানান, ৩১ অক্টোবরের মধ্যে জাদুঘরের নির্মাণকাজ শেষ হবে এবং নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই উদ্বোধন সম্ভব হতে পারে।
তিনি বলেন, ‘আমরা হাসিনার দুঃশাসনের চিত্রগুলো কিউরেট করছি যাতে ষোলো বছরের ফ্যাসিবাদের ইতিহাস জীবন্ত থাকে। সরাসরি গণভবন থেকে আসা নির্দেশনায় পরিচালিত সব নির্যাতন ও নৃশংসতার ইতিহাসও এখানে তুলে ধরা হবে।’
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস নির্মাণকাজে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে আশা প্রকাশ করেন, এ জাদুঘরে যারা আসবেন তারা ৫ আগস্ট গণভবনে জনতার ঢলের অভিজ্ঞতা উপলব্ধি করতে পারবেন।
তিনি বলেন, ‘মানুষের মধ্যে দুঃশাসনের বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তোলার এই অনুভূতি জাগানোই জাদুঘরের অন্যতম লক্ষ্য।‘
জাদুঘরের চিফ কিউরেটর তানজীম ওয়াহাব জানান, নির্মাণকাজে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রসিকিউশন টিম এবং গুম বিষয়ক তদন্ত কমিশনের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ চলছে। তিনি বলেন, ‘এটি হবে একটি অনন্য জাদুঘর। ষোলো বছরের দুঃশাসনের গল্পগুলো ধারাবাহিকভাবে উপস্থাপন করা হবে, যাতে দর্শনার্থীরা জানতে পারেন শেখ হাসিনা কীভাবে দেশ পরিচালনা করতেন।’
ফারুকী আরও জানান, গুম-খুনের নির্দেশ দেওয়া অনেক অডিও ইতোমধ্যেই জাদুঘর কর্তৃপক্ষের হাতে এসেছে। এগুলো সংরক্ষণ করা হচ্ছে, পাশাপাশি শেখ হাসিনা কীভাবে গুমের শিকার পরিবারগুলোকে ডেকে এনে ভুয়া সান্ত্বনা দিতেন সেই ঘটনাগুলোও তুলে ধরা হবে।
এ ছাড়া জাদুঘরে একটি স্ক্রিনিং সেন্টার থাকবে, যেখানে জুলাই এবং ষোলো বছরের দুঃশাসন নিয়ে নির্মিত ডকুমেন্টারি প্রদর্শনের ব্যবস্থা থাকবে।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, গুম তদন্ত কমিশনের সদস্য নাবিলা ইদ্রিস, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব নজরুল ইসলাম, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মফিদুর রহমান এবং বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের গভর্নিং বডির চেয়ারপারসন মেরিনা তাবাসসুম।
জুলাই স্মৃতি জাদুঘরের গবেষকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ড্যানিয়েল আফজালুর রহমান, কবি হাসান রোবায়েত, মালিহা নামলাহা, শিল্পী তেজশ হালদার জশ, মোসফিকুর রহমান জোহান, স্থপতি সালাউদ্দিন আহমেদ এবং সমন্বয়কারী হাসান এনাম।