১৫ বছরে ‘আওয়ামী সন্ত্রাসে’ নিহতদের তালিকার নির্দেশ

টাইমস রিপোর্ট
3 Min Read
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আবরার ফাহাদের পরিবার। ছবি: পিআইডি

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আগে ১৫ বছরে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের অন্যান্য সংগঠনের সন্ত্রাসীদের হামলা ও তৎকালীন সরকারের নির্দেশে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর হাতে নিহতদের তালিকা প্রস্তুতের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।

বৃহস্পতিবার বিকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন নিহত বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের বাবা মোহাম্মদ বরকত উল্লাহ, ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ ও মামা মোহাম্মদ মোফাজ্জল হোসেন।

এ সময় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আবরার ফাহাদকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে মারার ঘটনাটি পুরো জাতিকে স্তব্ধ করে দিয়েছিল। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার হবেই। চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আগে আওয়ামী লীগ ও এর সংগঠনের দলীয় সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহতের তালিকা করে প্রত্যেকটি ঘটনা তদন্ত করা হবে।’

তিনি বলেন, ‘পাশাপাশি তৎকালীন সরকারের নির্দেশে রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে ব্যবহার করে যে হত্যাকাণ্ড হয়েছে সেগুলো নিয়েও তদন্তকাজ চলছে। সরকার ইতোমধ্যেই ব্যবস্থা নিয়েছে।’

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতে চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আগে আওয়ামী লীগ ও এর সংগঠনের দলীয় সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহতের তালিকা করে প্রত্যেকটি ঘটনা তদন্তের অনুরোধ জানান আবরার ফাহাদের পরিবার।

এ সময় আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার বিচারকাজ ত্বরান্বিত করতে সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নিতে প্রধান উপদেষ্টাকে অনুরোধ জানান মোহাম্মদ বরকত উল্লাহ।

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আবরার ফাহাদের পরিবার

বরকত উল্লাহ বলেন, ‘দেশের জন্য কথা বলার কারণে তার ছেলেকে সন্ত্রাসীরা নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে। আবরার ফাহাদ দেশের স্বার্থে কথা বলেছিল, অসম পানি বণ্টনের বিরুদ্ধে বলেছিল।’

আবরার ফাহাদের বাবা বলেন, ‘তার মা এখনঅ ছেলের জন্য আর্তনাদ করেন। আর কোনো মায়ের যেন সন্তান হারানোর কষ্ট পেতে না হয়, আর কোনো মায়ের বুক যেন খালি না হয়।’

কুষ্টিয়ায় গড়াই নদীর ওপরে সেতু না থাকায় প্রায় ৩০ হাজার মানুষ ভোগান্তিতে পড়ছে উল্লেখ করে সেখানে একটি সেতু তৈরির জন্য উদ্যোগ নিতে প্রধান উপদেষ্টাকে অনুরোধও করেন বরকত উল্লাহ।

এদিকে আবরার ফাহাদের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আরও শিক্ষার্থীবান্ধব করতে প্রধান উপদেষ্টার কাছে অনুরোধ।

বুয়েটের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাইয়াজ বলেন, ‘আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এখনো শিক্ষার্থী বান্ধব নয়। পড়াশোনার জন্য প্রয়োজনীয় ল্যাব, সরঞ্জাম ও অন্যান্য ব্যবস্থার সংকট রয়েছে।’

‘অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা অনেক। আমরা চাই এ সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে শিক্ষার্থী বান্ধব করতে পদক্ষেপ নেবে,’ যোগ করেন তিনি। একই সঙ্গে, বুয়েটে র‍্যাগিং বন্ধে সরকারকে কঠোর ব্যবস্থা নিতেও অনুরোধ জানান তিনি।

২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর বুয়েটের একটি হলে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছিল শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে। নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডে তখন দেশজুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। হত্যার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের সবাই ছিলেন বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের (বর্তমানে নিষিদ্ধ সংগঠন) নেতাকর্মী।

এ ঘটনায় করা মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে ২০ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৫ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। বিচারিক আদালতের দেওয়া সেই রায় বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *