‘তৃতীয় শ্রেণি’র চাকরির পরিচয় থেকে মুক্তি চান প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। এজন্য সহকারী শিক্ষকদের বেতন স্কেল ন্যূনতম ১১তম গ্রেডে উত্তীর্ণ করা এবং প্রধান শিক্ষকদের জন্য দশম গ্রেড ও দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তার মর্যাদা নিশ্চিতসহ পাঁচ দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি।
সরকার তাদের এ দাবি মেনে না নিলে ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আমরণ অনশনের কর্মসূচিও ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি।
শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এই ঘোষণা দেন শিক্ষকরা।
‘প্রাথমিক শিক্ষায় শিক্ষকদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিতকরণে অন্তরায় ও সমসাময়িক সংকট নিরসন’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রাথমিক শিক্ষা ক্যাডার চালুর দাবি জানান বক্তারা।
এ সময় দশম গ্রেডের দাবিতে মামলাকারী ৪৫জন প্রধান শিক্ষকের নামে শুধু জিও জারির ঘটনার সমালোচনা করেন শিক্ষকরা।
তারা বলেন, ‘দেশের ৬৫ হাজার ৫২৪ জন প্রধান শিক্ষকের জন্যই দশম গ্রেডের জিও জারি করতে হবে। মামলাকারীরা সব প্রধান শিক্ষকের প্রতিনিধি হিসেবেই মামলা করেছিলেন।’
শিক্ষকরা আরও বলেন, ‘অনার্স-মাস্টার্স পাস করে শিক্ষকতায় এসে তৃতীয় শ্রেণির চাকরির অজুহাতে সামাজিকভাবে হেয় হতে হয়। শিক্ষকরা যাতে সমাজে মাথা তুলে চলতে পারে, সেজন্য তাদের চাকরির গ্রেড ও বেতন বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’
এ সময় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক শ্রেষ্ঠ সভাপতি রফিক সিকদার বলেন, ‘ইউরোপে প্রাথমিক শিক্ষকদের মর্যাদা অনেক। এদেশেও শীর্ষ মেধাবীদের প্রাথমিক শিক্ষায় টানতে হলে এই পেশার সুযোগ-সুবিধা ও মর্যাদা বৃদ্ধি করতে হবে।’
ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মু. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষকরা নবম গ্রেডের দাবিদার। তারা নিজেরা প্রথম শ্রেণির শিক্ষক না হলে, প্রথম শ্রেণির মানুষ তৈরি করতে পারবে না।’
শিক্ষকদের অন্যান্য দাবিগুলো হলো-সহকারী শিক্ষককে ১১তম গ্রেডের এন্ট্রি পদ হিসেবে ধরতে হবে, প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ পদোন্নতির ব্যবস্থা রাখা, চলতি দায়িত্বের প্রধান শিক্ষকদের যোগদানের তারিখ থেকে পদোন্নতি বাস্তবায়ন করা, ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড নিশ্চিত করা এবং নবম পে-স্কেল ঘোষণা।
মত বিনিময় সবায় অন্যান্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন শাহীন, সাধারণ সম্পাদক খায়রুন নাহার লিপি, নীতি নির্ধারণী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম, উপদেষ্টা ভিপি ইব্রাহীম প্রমুখ।