হোটেলে ৩ মৃত্যুর ঘটনায় আসামি রিমান্ডে

টাইমস রিপোর্ট
3 Min Read
মগবাজারের হোটেল সুইট স্লীপে অবস্থানকালে মারা যান তিনজন। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার মগবাজারে আবাসিক হোটেল থেকে সৌদি প্রবাসী মনির হোসেন ও তার স্ত্রী-সন্তানের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় মামলা হয়েছে। এ মামলায় গ্রেপ্তার একমাত্র আসামি রফিকুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।

মঙ্গলবার শুনানি নিয়ে রিমান্ডের এ আদেশ দেন ঢাকার মহানগর হাকিম মাহবুব আলম।

আসামিকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা রমনা মডেল থানার এসআই জালাল উদ্দিন। আসামির পক্ষে তার আইনজীবী মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন রিমান্ড আবেদন বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন।

আদালতের রমনা মডেল থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই জিন্নাত আলী বলেন, শুনানি শেষে বিচারক দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

গত রোববার সকালে মগবাজারের সুইট স্লীপ নামের আবাসিক হোটেল থেকে অসুস্থ অবস্থায় আদ-দ্বীন হাসপাতালে নেওয়া হয় সৌদি প্রবাসী মনির হেসেন (৪৮), তার স্ত্রী নাসরিন আকতার স্বপ্না (৩৮) ও তাদের সন্তান আরাফাতকে (১৮)। চিকিৎসকরা তাদের ‍ মৃত ঘোষণা করেন। সুরতহাল প্রতিবেদনে খাদ্যে বিষক্রিয়ায় তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়। মরদেহগুলোতে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।

রহস্যজনক এ তিন মৃত্যুর ঘটনায় মনিরের ভাই রমনা থানায় মঙ্গলবার একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। হত্যার নেপথ্যে জমিজমা নিয়ে দ্বন্দ্বের কথা এজাহারে উল্লেখ করেন। এ মামলাতে পুলিশ মনিরের চাচা রফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে।

রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম ফারুক বলেন, ‘মঙ্গলবার মনিরের ভাই ইতালি প্রবাসী নুরুল আমিন মানিক বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেছেন। মামলায় নিহতের চাচাতো চাচা রফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, সৌদি প্রবাসী মনির গত ঈদুল আজহার ছুটিতে গ্রামে আসেন। প্রবাসে থাকা অবস্থায় মনির তাদের চাচা রফিকুল ইসলামের মাধ্যমে ঢাকাসহ গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় জমি এবং বাড়ি কেনেন। এসব সম্পদ ও সম্পত্তির দেখাশোনা করছিলেন রফিকুল। মনির দেশে আসার পর জমিজমা ও লেনদেন নিয়ে মনিরের সঙ্গে রফিকুল ইসলামের বিরোধ হয়।

গত ২৮ জুন মনির প্রতিবন্ধী ছেলের চিকিৎসার জন্য স্ত্রীসহ ঢাকায় আসেন। তারা ঢাকায় অবস্থান করা চাচা রফিকুল ইসলামসহ এসপিআরসি হাসপাতালে যান। ওইদিন ডাক্তারের সিরিয়াল না পাওয়ায় বিকেলে তারা মগবাজারের সুইট স্লীপ হোটেলে গিয়ে ওঠেন। বিকেলে পাশের ভর্তা ভাত হোটেলে গিয়ে খাবার খান মনির ও রফিকুল ইসলাম। সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে রফিকুল ইসলাম মনিরের স্ত্রী ও সন্তানের জন্য খাবার প্যাক করে হোটেলের কক্ষে নিয়ে যান। এরপর রফিকুল ইসলাম তার বাসায় চলে যান। মনির ও তার পরিবার রফিকুলের আনা খাবার খেয়ে রাতে ঘুমিয়ে পড়েন। পরে তারা বমি করতে থাকেন, এক পর্যায়ে তিনজনেরই মৃত্যু হয়।

এজাহারে বাদী বলেন, ‘আত্মীয়-স্বজনদের নিকট থেকে শুনে আমার ধারণা হয়েছে যে, আমার ভাইয়ের সম্পত্তি আত্নসাৎ করতেই পরিকল্পিত উপায়ে তাদের হত্যা করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি বা ব্যক্তিরা পরিকল্পনা করে তাদের খাবারের সাথে বিষ বা বিষ জাতীয় পদার্থ মিশিয়ে অথবা অন্য কোন উপায়ে হত্যা করেছে।’

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *