স্বৈরাচার পালালেও অদৃশ্য শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংরাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
শনিবার বিকালে কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে ভার্চ্যুয়ালি যোগ দিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘যেকোনো মূল্যে নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। বিএনপির নাম ব্যবহার করে কেউ যাতে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াতে না পারে সে বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে।’
তারেক রহমান আরও বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার কিছু সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছে। বিএনপি আরও আড়াই বছর আগে প্রস্তাবগুলোর ৯৫ শতাংশ দেশের মানুষের সামনে উপস্থাপন করেছে। অন্যান্য রাজনৈতিক দলও মতামত দিয়েছে। কোনো কোনো বিষয়ে হয়তো মতপার্থক্য রয়েছে, তবে মানুষের রাজনৈতিক অধিকার, ভোটাধিকার, নিরাপত্তা ও কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার প্রশ্নে বিএনপির কারও সঙ্গে আপত্তি নেই।’
তিনি বলেন, ‘এই কাজগুলো বাস্তবায়নের জন্য জনগণের রায়ে একটি জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। বাংলাদেশের মানুষ গত ১৬ বছর ধরে নিজেদের অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য লড়াই করছে। গণতন্ত্রে বিশ্বাসী রাজনৈতিক দলগুলোও ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ভবিষ্যৎ প্রজন্মের শিক্ষা, নারীর অধিকার ও স্বাবলম্বিতা, যুবকদের কর্মসংস্থান, কৃষকদের সহায়তা এবং সবার চিকিৎসা নিশ্চিতকরণের বিষয়গুলো তুলে ধরে বলেন, ‘এসব বাস্তবায়ন করতে হলে জনগণের রায়ে সরকার প্রতিষ্ঠা ছাড়া বিকল্প নেই।’
জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন আয়োজন করবে। জনগণের সমর্থন নিয়ে বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়ন করতে হলে এক কথায় আমাদের সামনে লক্ষ্য থাকবে—যেকোনো মূল্যে ঐক্যবদ্ধ থাকা। এর কোনো বিকল্প নেই।’
তারেক রহমান বলেন, ‘বিএনপি একটি বিশাল পরিবার। এখানে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। কেউ যেন ব্যক্তিগত স্বার্থে দলের নাম ব্যবহার করতে না পারে, বিভ্রান্তি ছড়াতে না পারে। জনগণের পাশে থেকে কাজ করাই হবে আমাদের প্রধান লক্ষ্য।’
কিশোরগঞ্জ পুরাতন স্টেডিয়ামে আয়োজিত এ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলম এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম। এ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সকাল থেকেই জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে সমবেত হন। কয়েক হাজার নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে সম্মেলন উৎসবমুখর পরিবেশে শুরু হয়। এদিন দুই হাজার ৯০ জন কাউন্সিলরের ভোটে জেলা বিএনপির নতুন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হবেন। সভাপতি পদে দুইজন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে চারজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।