শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ সারা দেশের সরকারি হাসপাতালে চলমান অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি ও রোগী হয়রানির প্রতিবাদে বরিশালে পথে নেমেছেন স্থানীয়রা। স্বাস্থ্যখাতে সংস্কারের দাবিতে ‘ছাত্র-জনতা’র ব্যানারে গত ১২ দিন ধরে চলছে তাদের কর্মসূচি। প্রতিদিনই করা হচ্ছে সড়ক অবরোধ।
শুক্রবার আন্দোলনের ১২তম দিনেও বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের নথুল্লাবাদ এলাকায় সড়ক অবরোধ করা হয়। বেলা সাড়ে ১১টা থেকে সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত চলছিল তাদের ‘বরিশাল ব্লকেড’ কর্মসূচি। অবরোধের কারণে ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের ছয় জেলার যোগাযোগ ব্যাহত হয়।
এসময় দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে ‘সিন্ডিকেট’ ও ‘চিকিৎসা বাণিজ্যের’ বিরুদ্ধে স্লোগান দেন আন্দোলনকারীরা। তাদের সঙ্গে থাকা প্ল্যাকার্ড ও ব্যানারেও লেখা ছিল স্বাস্থ্যখাতে সংস্কারের দাবি।
আন্দোলনে অংশ নেন সরকারি ব্রজমোহন কলেজ, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, হাতেম আলী কলেজ, বরিশাল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন সাধারণ মানুষ, কনটেন্ট ক্রিয়েটর ও সামাজিক সংগঠনের সদস্যরাও।
আন্দোলনকারীরা বলছেন, কেবল বরিশালে নয় স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতির কারণে সারা দেশেই সাধারণ মানুষ চিকিৎসা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। স্বাস্থ্যখাতে সব দুর্নীতি হয় সিন্ডিকেটের মাধ্যমে। তাই সেই সিন্ডিকেট ভেঙে সবার জন্য সমান চিকিৎসা নিশ্চিত করার দাবিতেই পথে নেমেছেন তারা।
গত ১২ দিনেও আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনার কোনও উদ্যোগ নেয়নি সরকারি কোনও সংস্থা বা কর্তৃপক্ষ। ফলে ক্রমেই দীর্ঘায়িত হচ্ছে আন্দোলন, প্রতিদিনই রাস্তায় নেমে আসছেন শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ।
তবে পুলিশের পক্ষ থেকে আন্দোলনকারীদের সড়ক ছেড়ে যেতে অনুরোধ করা হলেও দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অবরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ছাত্র-জনতা। এমনকি শুক্রবার কর্মসূচি চলাকালে নথুল্লাবাদ মহাসড়কেই জুমার নামাজ পড়েন আন্দোলনে থাকা ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মেট্রোপলিটন এয়ারপোর্ট থানার ওসি জাকির হোসেন সিকদার বলেন, ‘জনদুর্ভোগের বিষয়টি বিবেচনায় নিতে আন্দোলনকারীদের অনুরোধ করেছিলাম। তবে তারা পথ ছাড়েননি। এখন নথুল্লাবাদ এলাকায় আমরা সার্বক্ষণিক উপস্থিত থাকছি যাতে অন্তত কোনও বিশৃঙ্খলা না ঘটে বা অনাকাঙিক্ষত পরিস্থিতি এড়ানো যায়।’