স্কাউসার ইন দ্য টিম’ আর থাকছেন না—ট্রেন্টের লিভারপুল ছাড়ার ঘোষণা

টাইমস স্পোর্টস
3 Min Read
লিভারপুলের সঙ্গে ২০ বছরের সম্পর্কের ইতি টানার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ট্রেন্ট আলেকজান্ডার-আর্নল্ড। ছবিঃ ট্রেন্ট আলেক্সান্ডার আর্নোল্ড

লিভারপুলের সঙ্গে ২০ বছরের সম্পর্কের ইতি টানার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ট্রেন্ট আলেকজান্ডার-আর্নল্ড। ক্লাবের হয়ে একসময়কার একাডেমি বালক থেকে হয়ে ওঠা এই পূর্ণাঙ্গ তারকা সোমবার নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়ে দিয়েছেন—মৌসুম শেষে নতুন চ্যালেঞ্জ নিতে বিদায় জানাচ্ছেন অ্যানফিল্ডকে।

মাত্র ছয় বছর বয়সে লিভারপুলের একাডেমিতে যোগ দিয়েছিলেন ট্রেন্ট। ২০১৬ সালে সিনিয়র দলে অভিষেকের পর খেলেছেন ৩৫০টিরও বেশি ম্যাচ, জিতেছেন প্রিমিয়ার লিগ, চ্যাম্পিয়নস লিগসহ আটটি বড় শিরোপা। ডান দিক থেকে তার আক্রমণাত্মক খেলা ও গোল বানিয়ে দেওয়ার দক্ষতা তাকে দলেরই নয়, যুগের অন্যতম সেরা রাইট-ব্যাক বানিয়েছে—যার সবচেয়ে বিখ্যাত মুহূর্তটি ২০১৯ সালে বার্সেলোনার বিপক্ষে সেই বিখ্যাত “দ্রুত কর্নার”।

চুক্তি নবায়নের প্রস্তাব ছিল—যা তাকে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পাওয়া ডিফেন্ডারদের একজন করে তুলত। কিন্তু ট্রেন্ট রাজি হননি। সূত্র বলছে, স্প্যানিশ ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেওয়াটাই এখন সবচেয়ে সম্ভাব্য গন্তব্য।

ভক্তদের একটা অংশ তার এই সিদ্ধান্তকে স্বাভাবিক বলেই দেখছেন—ছেলেবেলা থেকে যে ক্লাবের হয়ে সব কিছু জিতেছেন, সেখানে নতুন কিছু খোঁজার তাগিদটা বোঝা যায়। তবে অনেকেই আঘাত পেয়েছেন, মনে করছেন লিভারপুলের এক “লোকাল লাড” হয়েও তার বিদায়টা অনেকটা মাইকেল ওয়েন কিংবা স্টিভ ম্যাকমানামানের মতো—যারা রিয়ালে যাওয়ার সময়ও বিতর্কের জন্ম দিয়েছিলেন।

ঘোষণাটা এসেছে এমন এক সময়, যখন ট্রেন্ট টটেনহামের বিপক্ষে ৫-১ গোলের জয়ে লিভারপুলকে এনে দিয়েছেন আরেকটি লিগ শিরোপা। সেদিন ‘কপ’ গ্যালারি যখন তাকে অভিবাদন জানাচ্ছিল, তখন কেউ জানত না এটা হয়তো তার অ্যানফিল্ডে শেষ ম্যাচ।

তাকে বদলে দেওয়া সহজ হবে না। প্রিমিয়ার লিগে একজন ডিফেন্ডার হিসেবে সবচেয়ে বেশি অ্যাসিস্টের রেকর্ড (৬৪) তার নামেই। অনেক সময় তিনিই ছিলেন লিভারপুলের আক্রমণের মূল চালিকা। নতুন কোচ আর্নে স্লট এখন ভাবছেন, সরাসরি কাউকে আনবেন নাকি সিস্টেমেই বদল আনবেন।

উত্তরসূরি হিসেবে ২১ বছর বয়সী কনর ব্র্যাডলি আশার আলো দেখিয়েছেন ঠিকই, তবে অভিজ্ঞতার ঘাটতি রয়েছে। তাই লিভারপুলের নজর এখন ট্রান্সফার মার্কেটের দিকেও। সম্ভাব্য বিকল্প হিসেবে ইতিমধ্যে উঠে এসেছে জেরেমি ফ্রিমপং, ডেনজেল ডামফ্রিজ ও ওলা আইনার নাম।

ট্রেন্টের জন্য সামনে অপেক্ষা করছে ইউরোপের আরেক বড় মঞ্চ। আর লিভারপুলের জন্য এটা এক যুগের সমাপ্তি—যার মধ্য দিয়েই শুরু হতে পারে নতুন করে গড়া আরেকটি শক্তিশালী অধ্যায়।

অ্যানফিল্ডের পাশের দেয়ালে এখনও লেখা আছে—“লিভারপুলের এক সাধারণ ছেলে, যার স্বপ্ন সত্যি হয়েছে।” স্বপ্নটা এখন নতুন রূপ নিচ্ছে। হয়তো এটাই সেই রূপকথার শেষ যেটা সবাই চায়নি, কিন্তু সম্মান আর স্মৃতির ভাঁজে জায়গা নিয়ে বিদায়টা হচ্ছে গর্বেরই।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *