ঝিনাইদহে এবার পাটের আশানুরূপ দাম পাওয়ায় চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে। পাটে রোগ কম হওয়া এবং জাগ (পচানো) দিতে কোনো ঝামেলা পোহাতে হয়নি তাদের। পাটের রঙ ভালো, গাছ অনেক লম্বা হওয়াই ভালো মানের পাটকাঠিও উৎপাদিত হয়েছে।
কৃষি বিভাগ বলছে, চলতি বছর জেলার ছয়টি উপজেলায় ২০ হাজার ২২৯ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ করা হয়েছে। গত বছর ২১ হাজার ৪৪৬ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ করা হয়েছিল।
সদর উপজেলায় গত বছর পাঁচ হাজার ৬২ হেক্টর জমিতে আবাদ করা হয়েছিল পাট। এবার চার হাজার ৮১০ হেক্টর জমিতে আবাদ করা হয়েছে। শৈলকুপায় গত বছর আট হাজার ৪৭৭ হেক্টর, এবার সাত হাজার ৭৯৮ হেক্টর জমিতে, কালীগঞ্জ উপজেলায় গত বছর ৭১০ হেক্টর, এ বছর ৬৬৫ হেক্টর জমিতে, কোটচাঁদপুরে গত বছর ৪১৫ হেক্টর, এ বছর ৩৫৪ হেক্টর জমিতে, মহেশপুরে গত বছর চার হাজার ৭০ হেক্টর জমিতে, এ বছর তিন হাজার ৮৯০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ করা হয়েছে। তবে হরিণাকুণ্ডু উপজেলায় গত বছর ও এ বছর দুই হাজার ৭১২ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ করা হয়েছে।
অপরদিকে, পাটের আঁশ ছড়াতে পুরুষ শ্রমিকের পাশাপাশি নারী শ্রমিকরাও কাজ করছেন। পারিশ্রমিক হিসেবে তাদের দেওয়া হয় পাটকাঠি।
আছিয়া খাতুন নামে এক নারী শ্রমিক জানান, বাড়িতে জ্বালানি সংকট রয়েছে। এ ছাড়া পানের বরজে বেড়া দেওয়ার জন্য তিনি পাটের আঁশ ছড়াতে এসেছেন। বিনিময়ে পাটকাঠি সংগ্রহ করছেন।
সদর উপজেলার বৈডাঙ্গা গ্রামের শহিদুল ইসলাম নামে এক কৃষক বলেন, ‘আমি চারটি জাগ দিয়েছি। সব জায়গায় পাটের আঁশ ছাড়াতে মহিলারা কাজ করছেন। বিনিময়ে তাদের দেওয়া হবে পাটকাঠি। এতে পাট চাষে বিনিয়োগ করা টাকা উঠে আসছে। এ ছাড়া পানের বরজের জন্য পানচাষিরা চড়া দামে পাটকাঠি কিনছেন।’
মিন্টু মুন্সি নামে এক পাট ব্যবসায়ী বলেন, ‘মান বুঝে সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার টাকা মণ দরে পাট কেনা হচ্ছে।’
কৃষি অধিদপ্তর ঝিনাইদহের উপপরিচালক কৃষিবিদ ষষ্টি চন্দ্র রায় জানান, এবার খালবিলে পানি থাকায় পাট পচাতে কোনো ঝামেলা পোহাতে হয়নি। তবে রোপণের সময় প্রচুর বৃষ্টি হওয়ায় অনেক চাষি ইচ্ছা থাকলেও এবার পাটের আবাদ করতে পারেননি।