বহুল আলোচিত সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক মো. লিয়াকত আলীকে দেওয়া মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছে হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ছয় আসামির যাবজ্জীবন দণ্ড বহাল রেখেছেন আদালত।
সোমবার বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি মো. সগীর হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে ৫০ হাজার টাকার জরিমানার আদেশ বহাল রাখা হয়েছে রায়ে।
গত ২৯ মে বহুল আলোচিত সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল শুনানি শেষ হয়। একইসঙ্গে রায়ের জন্য আজকের দিন ধার্য করা হয়। বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি মো. সগীর হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ রায়ের জন্য এ দিন ধার্য করেন।
ওইদিন আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হুমায়ুন কবির মঞ্জু ও শামীমা দিপ্তি। আর আসামিপক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এসএম শাহাজাহান।
২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফ-কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভের একটি চেকপোস্টে পুলিশ গুলি চালিয়ে সিনহাকে হত্যা করে। এরপর দেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা দাবি করলেও এটি ‘বন্দুকযুদ্ধ’ নয়, বরং পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড ছিল—তা উঠে আসে তদন্তে।
জজ আদালত ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি রায়ে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ এবং বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। সিনহা হত্যায় সহযোগিতা ও ঘটনাটি ধামাচাপার অভিযোগে আরও তিন পুলিশ সদস্য ও তিন সোর্সকে যাবজ্জীবন দেন। সাত আসামিকে খালাস দেওয়া হয়।
সিনহা সেনাবাহিনী থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নিয়ে কক্সবাজারে ভ্রমণবিষয়ক তথ্যচিত্র তৈরি করতে গিয়েছিলেন। ওসি প্রদীপের নেতৃত্বে স্থানীয় মানুষের ওপর পুলিশের নির্যাতনের তথ্য তিনি জানতে পারেন। সেই ‘গোপন তথ্য’ প্রকাশ হতে পারে—এই আশঙ্কা থেকে সিনহাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয় বলে চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়।