‘সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে বিশেষায়িত আইন জরুরি’

টাইমস রিপোর্ট
3 Min Read
নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সপ্তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা। ছবি: টাইমস
Highlights
  • নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সভাপতি আব্দুল্লাহ মেহেদী দীপ্ত বলেন, ‘সড়কের পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে গেলে বিশেষায়িত সড়ক পরিবহন আইন লাগবে।’

সড়কে দুর্ঘটনা কমানোর জন্য বিশেষায়িত সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়ের দাবি জানিয়েছে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন (নিসআ)। পরিবহন খাতে নৈরাজ্যের প্রধান কারণ হিসেবে রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবকে দায়ী করা করেন সংগঠনটির নেতারা।

বক্তারা বলেছেন, প্রচলিত আইন শুধু জরিমানা বাড়িয়েছে কিন্তু দুর্ঘটনায় সড়কে মৃত্যুর হার এখনো বছরে পাঁচ হাজারের ওপরে। এই হত্যাযজ্ঞ প্রতিরোধে নতুন আইনের পাশাপাশি বিআরটিএ এবং বিআরটিসি পুনর্গঠন করতে হবে। শক্তিশালী রাজনৈতিক কমিটমেন্ট প্রয়োজন। নাহলে এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ সম্ভব না।’

মঙ্গলবার নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সপ্তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বক্তারা।  ‘কিশোর বিপ্লব থেকে রাষ্ট্র সংস্কার সংগ্রাম ও ঐক্যের সাত বছর’ শিরোনামে রাজধানীর ইন্সস্টিটিউসন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে দিনব্যাপী এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় বক্তারা বলেছেন, ‘২০১৮ সালে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন সরকার বাধ্য হয়ে একটি সড়ক পরিবহন আইন প্রণয়ন করেছিল। কিন্তু এটি আসলে ১৯৮৩ সালের মোটর ভেহিক্যাল অর্ডিন্যান্স থেকে কপি-পেস্ট করা। শুধু জরিমানার অঙ্ক ও সাজার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। এর ভাষা অস্পষ্ট এবং প্রায়োগিক বাস্তবতা নাই।’

নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সভাপতি আব্দুল্লাহ মেহেদী দীপ্ত বলেন, ‘সড়কের পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে গেলে বিশেষায়িত সড়ক পরিবহন আইন লাগবে।’

সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক তানজীদ মোহাম্মদ সারওয়ার রেজা বলেন, ‘পরিবহন সেক্টরে অবস্থা নাজুক। ঢাকা শহরে রেজিস্ট্রেশন নাই ১৯ শতাংশ গাড়ির। ফিটনেস নাই ৪২ শতাংশ গাড়ির। লাইসেন্সহীন চালকের সংখ্যা ৯ লাখের বেশি। বছরে ১ হাজার ৫৯ কোটি টাকা ঘুষ ও চাঁদা তোলা হয় শুধু ঢাকার বাসগুলো থেকে। প্রায় এক দশক থেকে এটি লুটপাটের একটি খাতে পরিণত হয়েছে।’

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘২০১৮ থেকে ২০২৫ পর্যন্ত সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৪৭ হাজার ১২৯ জন, আহত হয়েছেন ৭২ হাজার ৮২৮ জন। এদের মধ্যে পুরো পরিবারসহ সড়কে প্রাণ গেছে এমন পরিবারের সংখ্যা ১৮৩টি।’

২০১৮ সালে রাজধানীর বিমানবন্দর রোডে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত কলেজছাত্রী দিয়া খানম মিমের বাবা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘লাইসেন্স প্রক্রিয়া ও প্রশিক্ষণ ঠিক করলে দুর্ঘটনা কিছুটা কমে আসবে। এই খাতে দুর্নীতি থামাতে হবে।’

বক্তারা আরও বলেন, ‘কয়েকটি কোম্পানির অধীনে রাজধানীতে সরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিবহন ব্যবস্থা পুনর্বিন্যাস করা প্রয়োজন। এমনকি অটো রিকশাকেও দ্রুত রেজিষ্ট্রেশনের আওতায় আনা উচিত।’

আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ডাকসুর সাবেক ভিপি ও গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান মঞ্জু, জাতীয় নাগরিক পার্টির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফ আদিব, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, জন অধিকার পার্টির চেয়ারম্যান ইসমাইল সম্রাট, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির মুখপাত্র রাশেদ প্রধান, জাতীয় অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান, বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব আশরাফুল আলম, জুলাই মঞ্চের আহ্বায়ক আরিফ তালুকদার, দ্য বাংলাদেশ ডায়লগের পরিচালক মেহেরবা সাবরিন, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) দুইজন সহযোগী অধ্যাপক সাদিয়া হক ও সাইফুল নেওয়াজ প্রমুখ।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *