শিক্ষা উপদেষ্টা ও শিক্ষাসচিবের পদত্যাগসহ কয়েকটি দাবিতে মঙ্গলবার সচিবালয়ের ভেতরে ও বাইরে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, ভাঙচুর ও সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে পুলিশের পক্ষ থেকে করা মামলায় অজ্ঞাত ১ হাজার ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুর বুধবার গণমাধ্যমকে জানান, মামলার এজাহারে পুলিশের কর্তব্যে বাধা, সরকারি দায়িত্ব পালনে বাধা, সচিবালয়ে ভাঙচুর, সরকারি প্রতিষ্ঠান ভাঙচুরের অভিযোগ আনা হয়েছে।
সোমবার রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে শিক্ষার্থীসহ ২৯ জন নিহত হন, আহত হন দেড় শতাধিক। মর্মান্তিক এ ঘটনার পর মঙ্গলবারের এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত করার ঘোষণা দেওয়া হয় মঙ্গলবার রাত তিনটার দিকে। তখন শিক্ষার্থীরা ঘুমিয়ে ছিলেন। সকালে এ ঘোষণা নিয়ে সারা দেশের পরীক্ষার্থীদের মধ্যে বিভ্রান্তি দেখা দেয়। এ ঘটনা শিক্ষার্থীদের ক্ষুব্ধ করে তোলে।
এর জেরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে আসা শিক্ষার্থীরা বুধবার বেলা আড়াইটার দিকে সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা ও শিক্ষাসচিবের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন। দেড় ঘণ্টার বেশি সময় ধরে সেখানে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দেওয়ার পর একপর্যায়ে সচিবালয়ের মূল ফটক খুলে ভেতরে ঢুকে পড়েন তারা। সেখানে অন্তত ২০টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। তখন পুলিশ ও সেনাসদস্যরা শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দিয়ে বাইরে বের করে দেন।
এ সময় শিক্ষার্থীদের লাঠিচার্জ করা হয়। সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করা হয়। এরপর বেশ কিছুক্ষণ ধরে শিক্ষার্থীরা বাইরে থেকে সচিবালয়ের ভেতরে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন।
পরে শিক্ষার্থীরা সচিবালয়ের পাশে জিপিও মোড় ও হাইকোর্ট মোড় এলাকায় অবস্থান নেন। সেসব জায়গা থেকে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া দেয় পুলিশ। পাল্টায় পুলিশের দিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন শিক্ষার্থীরা।
সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের এ ঘটনায় অন্তত ৭৫ জন শিক্ষার্থী আহত হন। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ ঘটনায় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর কয়েকজন সদস্যও আহত হন।