ফুল লেংথে পড়া আসিথা ফার্নান্দোর ইনসুইংগারটা ঠিকঠাক পড়তে পারেননি মুশফিকুর রহিম। বলের লাইন মিস করলেন, সোজা লাগল প্যাডে। জোরালো আবেদন, আম্পায়ার তুললেন আঙুল। রিভিউ নিয়েও রক্ষা হয়নি মুশফিকের। থামল ৩৫০ বলে ১৬৩ রানের দারুণ ইনিংস। তার সাথে ১৪৯ রানের দারুণ জুটি গড়া লিটন এসে পিঠ চাপড়ে দিলেন দৌড়ে। করতালির মধ্যে মাঠ ছাড়া মুশফিক তার সবটুকুই দিয়েছেন এই ইনিংসে। বাকি কাজটা ছিল লিটনের। কিন্তু এরপর তার এক রিভার্স সুইপেই যেন ধস নামল বাংলাদেশের ইনিংসে।
তৃতীয় সেশনে ২০ ওভারে ৬১ রান তুলে হারিয়েছে পাঁচ উইকেট। যার চারটি পড়েছে শেষ ১০ ওভারে। অবশ্য বৃষ্টিতে ঘণ্টা দেড়েক খেলা বন্ধ থাকার পর আলোকস্বল্পতায় ১০ ওভার বাকি থাকতে শেষ হয়েছে দ্বিতীয় দিনের খেলা। বাংলাদেশের সংগ্রহ ৯ উইকেটে ৪৮৪।
দলকে ৪৫৮ রানে রেখে মুশফিক বিদায় নিলেও লিটনের সামনে সুযোগ ছিল বড় ইনিংস খেলার, দলের সংগ্রহকে আরো দূর নিয়ে যাওয়ার। শান্ত-মুশফিকের ২৬৪ রানের ম্যারাথন জুটির পর অন্তত ৫০০ রানের ঘর বাংলাদেশ পেরিয়ে যাওয়া উচিত ছিল। তবে সেটা আর হয়নি, দুঃসময় পেরিয়ে সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে থাকা লিটন নিজের উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসায়।
গলের এই উইকেট পুরোপুরিই ব্যাটিং স্বর্গ। ইতিহাস বলে স্পিন সহায়ক হলেও উইকেট ভাঙতে সময় লাগে অন্তত দুই দিন। কাজেই প্রথম দুই দিন তেমন টার্ন-বাউন্সের দেখা পান না স্পিনাররা। কিন্তু এই টেস্টের উইকেট এমনই ফ্ল্যাট, যেখানে বোলারদের জন্য তেমন কিছুই নেই। কোনো ব্যাটার নিজে থেকে আউট হতে না চাইলে বা ভুল না করলে অন্তত বোলারদের তেমন সাধ্য নেই উইকেট নেয়ার। লিটন যেন নিজেই আউট হলেন। অথচ ওয়ানডে স্টাইলের ব্যাটিংয়ে দারুণ সব শটে পৌঁছে যান ৯০ রানে।
সেই নার্ভাস নাইন্টিই যেন কাল হলো তার। সব্যসাচী স্পিনার থারিন্দু রথনায়েকে ওভার দ্য উইকেটে বল করলেন বাম হাতে। উদ্দেশ্য অপর প্রান্তের পেসারদের ল্যান্ডিং জোনে তৈরি হওয়া রাফ কাজে লাগানো। যেটা ডানহাতি ব্যাটারদের জন্য লেগ সাইড, ফিল্ড প্লেসমেন্টও হলো তেমনই। বারবার লেগ সাইড লাইনের বাইরে বল পেয়ে কখনো ব্লক করে, কখনো প্যাড দিয়ে আটকে খানিকটা যেন হাপিয়ে ওঠেন লিটন। থারিন্দুর ফুল লেংথ বলে বাউন্ডারির খোঁজে তাই রিভার্স সুইপ করতে যান লিটন। আচমকা লাফিয়ে ওঠা বল লিটনকে লাইন মিস করায়। গ্লাভস ছুয়ে বল জমা পড়ে কিপার কুশাল মেন্ডিসের হাতে। আরো একবার সেঞ্চুরি বঞ্চিত থেকে গেলেন লিটন। ১২৩ বলে ১১ চার ও এক ছক্কায় ৯০-তেই আটকে থাকলেন এই ইনিংসে।
সাতে নামা জাকের আলীও আজ সুবিধা করতে পারেননি। ১৬ বলে ৮ রান করে বোল্ড হয়েছেন মিলান রথনায়েকের বলে। ৩০ বল খেলা নাঈম হাসানও তার শিকার। মিলানের সাথে তিনটি করে উইকেট নিয়েছেন আসিথা ও থারিন্দু।