রোহিঙ্গা সংকটে পাশে আছে ১৩ পশ্চিমা দেশ

টাইমস রিপোর্ট
3 Min Read
কক্সবাজারে রোহিঙ্গা আশ্রয় কেন্দ্রে দৈনন্দিন জীবন যাত্রা। ছবি: রয়টার্স

রোহিঙ্গা সংকট শুরু হওয়ার আট বছর পেরিয়ে গেলেও বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সংখ্যা এখনো ১১ লাখের বেশি। এই বাস্তবতায় পশ্চিমা বিশ্বের ১৩টি দেশ যৌথ বিবৃতি দিয়ে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।

এই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছে অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, সুইডেন ও সুইজারল্যান্ডসহ একাধিক দূতাবাস ও হাইকমিশন।

বিবৃতিতে বলা হয়, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর অভিযানে ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের ব্যাপক বাস্তুচ্যুতি ঘটে। আজও নতুন নতুন রোহিঙ্গা শরণার্থী হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছেন। এই দীর্ঘ সময়ের দুঃসহ বাস্তবতা ও অনিশ্চয়তার মধ্যেও রোহিঙ্গাদের সহনশীলতা ও মনোবলকে প্রশংসা করা হয় বিবৃতিতে।

পাশাপাশি রাখাইন রাজ্যে নিরাপত্তা ও মানবিক পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে বলে জানানো হয়। এতে বলা হয়, মিয়ানমারে এখনো এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়নি যেখানে রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায়, নিরাপদে, মর্যাদার সঙ্গে এবং টেকসইভাবে ফিরে যেতে পারবেন। এই পরিস্থিতি পাল্টাতে হলে প্রথমে সংকটের মূল কারণগুলো সমাধান করতে হবে। এজন্য একটি শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল মিয়ানমার গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়।

বিবৃতিতে মিয়ানমার সেনা সরকার ও অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর সহিংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোর তীব্র নিন্দা জানানো হয়। অবিলম্বে সব ধরনের সহিংসতা বন্ধ এবং মানবিক সহায়তার জন্য নিরাপদ ও বাধাহীন প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়। একই সঙ্গে অন্যায়ভাবে আটক ব্যক্তিদের মুক্তি এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও মানবিক আইনের লঙ্ঘনের জন্য দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করার ওপর জোর দেওয়া হয়।

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ঢাকাস্থ ১৩ দেশের কূটনৈতিকদের যৌথ বিবৃতি।

এতে বলা হয়, রোহিঙ্গারা নিজ ঘরে ফিরে যেতে চায়, আর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাদের প্রত্যাবাসনের জন্য পরিবেশ তৈরিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতিতে এই প্রত্যাবাসনের জন্য নির্দিষ্ট কোনো সময়সূচি এখনো নির্ধারণ করা সম্ভব নয়।

বিবৃতিতে ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘে অনুষ্ঠেয় উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনের আগেই রোহিঙ্গা সংকটের ওপর আন্তর্জাতিক মনোযোগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। পাশাপাশি ক্রমশ হ্রাস পাওয়া মানবিক সহায়তা তহবিলের প্রেক্ষাপটে রোহিঙ্গাদের আত্মনির্ভরশীলতা বাড়ানোর কথা বলা হয়।

এতে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের অর্থবহ অংশগ্রহণ ও প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা জরুরি, যাতে তারা নিজ ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিতে পারে এবং বাংলাদেশে অবস্থানকালে মর্যাদাপূর্ণ ও নিরাপদ জীবনযাপন করতে পারে।

বিবৃতির শেষ অংশে বলা হয়, আট বছর পরও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রোহিঙ্গা এবং বাংলাদেশের পাশে রয়েছে। সংকটের দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই সমাধান এবং এর মূল কারণগুলো দূর করতে আন্তর্জাতিক অঙ্গীকার অব্যাহত থাকবে।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *