কাশ্মিরের পাহেলগামে হামলার জেরে পরমাণু শক্তিধর দুই প্রতিবেশী দেশ ভারত ও পাকিস্তান এখন যুদ্ধের মুখোমুখি রয়েছে বলে আশঙ্কা করছে আন্তর্জাতিক মহল।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশটির সশস্ত্র বাহিনীকে ‘সময়, লক্ষ্যবস্তু ও হামলার পদ্ধতি নির্ধারণে’ পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছেন। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল ও প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান জেনারেল অনিল চৌহানের সঙ্গে বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্ত জানান মোদি।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মোহাম্মদ আসিফ একে ‘সামরিক আগ্রাসনের সম্ভাব্য পূর্বাভাস’ উল্লেখ করে জানান, পাকিস্তানের বাহিনী ‘সর্বোচ্চ সতর্কতা’য় রয়েছে এবং দেশের সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়লে ‘কৌশলগত জবাব’ দেওয়া হবে।
পাহেলগামে ২২ এপ্রিলের বন্দুক হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাদের অধিকাংশই ছিলেন পর্যটক।
মোদি সরকার এ ঘটনাকে ‘সীমান্তের সন্ত্রাস’ হিসেবে চিহ্নিত করে হামলার জন্য পাকিস্তানের জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই-তাইয়বার ঘনিষ্ঠ ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’কে (টিআরএফ) দায়ী করেছে। ভারতের দাবি, হামলাকারীদের মধ্যে অন্তত দুইজন পাকিস্তানি নাগরিক।
প্রধানমন্ত্রী মোদি দৃঢ়ভাবে বলেন, ‘পৃথিবীর যেখানেই থাকুক না কেন, আমরা প্রত্যেক সন্ত্রাসী ও তাদের পৃষ্ঠপোষকদের খুঁজে বের করব এবং শাস্তি দেব।’
ভারত ‘সিন্ধু পানি চুক্তি’ স্থগিত করার জেরে ভারতের জন্য আকাশসীমা বন্ধ করেছে পাকিস্তান।
তবে পাকিস্তানের দাবি, তারা হামলার সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত নয়। পাশাপাশি পাহেলগাম হামলার ‘স্বাধীন আন্তর্জাতিক তদন্ত’ দাবি করেছে দেশটি।
২৭ এপ্রিল ভারতীয় নৌবাহিনী দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মহড়া চালিয়েছে এবং কাশ্মীর সীমান্তে পাকিস্তানি অবস্থান থেকে আসা গুলির জবাব দিয়েছে বলেও জানায় দিল্লি।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘আমাদের অস্ত্রভাণ্ডারে পারমাণবিক অস্ত্র থাকলেও তা কেবলমাত্র অস্তিত্ব সংকটের মুখেই ব্যবহার করা হবে।’
তবে প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের মতে, উভয় দেশের অবস্থান কঠোর হলেও সরাসরি যুদ্ধের সম্ভাবনা এখনো কম।