গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ফেরার পথ দীর্ঘায়িত হওয়ায় তা দেশের চলমান সংকটকে আরও প্রকট করে তুলছে বলে মনে করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচন আয়োজনের ওপর জোর দেন তিনি।
আমীর খসরু বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছরের বেশি সময় হয়ে গেছে। নির্বাচন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে থাকলে দেশ একটি ডেমোক্র্যাটিক অর্ডারে চলত। কিন্তু তা না হওয়ায় দেশে সংকট দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, অর্থনীতি বিধ্বস্ত হয়ে পড়ছে। এখন যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন হওয়া উচিত।’
সোমবার ঢাকার গুলশানের একটি হোটেলে ‘স্কুল অব লিডারশীপ’-এর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ‘পোস্ট জুলাই পলিটিক্যাল থটস: হুইচ ডিরেকশন বাংলাদেশ ইজ ওয়াকিং’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বিপ্লবোত্তর সময়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যেসব দেশ এগিয়ে গেছে, সেই দেশগুলো ভালো অবস্থায় রয়েছে। অন্যদিকে, যে দেশগুলো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে, সেখানকার অর্থনীতি ও সমাজ অস্থিতিশীল এবং গৃহযুদ্ধ চলছে।’
তিনি দেশের নির্বাচন বিলম্বের কারণ ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘সরকারের সঙ্গে জনগণের মধ্যে কোনো “ব্রিজ” নেই। আইন-শৃঙ্খলা নেই, ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির, নতুন বিনিয়োগ হচ্ছে না।’
আমীর খসরু বলেন, ‘একজন বিনিয়োগকারী তার সময় ও অর্থের জন্য পরিকল্পনা করে কাজ করবে, কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার থাকায় দীর্ঘমেয়াদী সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।’
অন্তর্বর্তী সরকারের বিনিয়োগ সম্মেলনের উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘ওই সম্মেলনে কোনো নতুন বিনিয়োগ হয়নি। তবে নির্বাচনের ঘোষণা আসার পর বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে।’
‘ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হওয়াই একমাত্র গণতন্ত্র নয়। প্রত্যেক নাগরিককে রাজনীতি, অর্থনীতি ও সমাজে সমান অংশগ্রহণের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। রাজনীতিবিদদের এই দায়িত্ব গ্রহণ ও সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে,’ যোগ করেন তিনি।
বিএনপির অর্থনৈতিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে মানবসম্পদ উন্নয়নের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ‘১৮ কোটি মানুষকে মানবসম্পদে পরিণত করতে আমাদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে জিডিপির ৫ শতাংশ বিনিয়োগ করতে হবে। প্রতিটি পরিবারের জন্য শিক্ষার নিশ্চয়তা দিতে হবে।’
সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রিপনসহ অন্যরা।