নিখোঁজ সাংবাদিক বিভুরঞ্জনের মরদেহ মেঘনা নদী থেকে উদ্ধার

টাইমস রিপোর্ট
3 Min Read
সাংবাদিক বিভুরঞ্জন সরকার। ছবি: সংগৃহীত

দুদিন ধরে নিখোঁজ সাংবাদিক ও লেখক বিভুরঞ্জন সরকারের মরদেহ পাওয়া গেছে।

শুক্রবার বিকালে মেঘনা নদীর মুন্সীগঞ্জ অংশ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করেন নৌ পুলিশের কলাগাছিয়া ফাঁড়ির সদস্যরা।

নারায়ণগঞ্জের কলাগাছিয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) সালেহ আহমেদ পাঠান বলেন, ‘কলাগাছিয়া এলাকায় মেঘনা নদী থেকে ষাটোর্ধ্ব এক ব্যক্তির ভাসমান মরদেহ উদ্ধার করে নৌ পুলিশ। মরদেহের সঙ্গে রমনা থানা এলাকা থেকে নিখোঁজ সাংবাদিকের ছবির মিল রয়েছে। রমনা থানা নিখোঁজ জিডির সঙ্গে যে ছবিটি পাঠিয়েছিল তার সঙ্গে মিলিয়ে দেখার পর বিষয়টি রমনা থানাকে জানানো হয়।’

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. মাসুদ আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

রাত পৌনে নয়টার দিকে বিভুরঞ্জনের ছেলে ঋত সরকার ও ভাই চিররঞ্জন সরকার মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে গিয়ে মরদেহটি শনাক্ত করেন।

বিভুরঞ্জন সরকার দৈনিক আজকের পত্রিকার জ্যেষ্ঠ সহকারী সম্পাদক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

তার পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে অফিসে যাওয়ার কথা বলে সিদ্ধেশ্বরীর বাসা থেকে বের হন তিনি। এরপর থেকে তার আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।

একই দিন সকাল সোয়া ৯টায় অনলাইন নিউজপোর্টাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কমে একটি খোলাচিঠি ইমেইল করেন তিনি। সেখানে তুলে ধরেন তার সাংবাদিকতা জীবনের নানা পাওয়া-না পাওয়ার হিসাব। তুলে ধরেন চাপের মুখে সাংবাদিকতার প্রসঙ্গও।

খোলা চিঠির নিচে ফুটনোট হিসেবে লেখেন, ‘জীবনের শেষ লেখা হিসেবে এটা ছাপতে পারেন।’

বিডিনিউজে খোলাচিঠিটি শুক্রবার বিকাল ৫টা ২৩ মিনিটে প্রকাশ করা হয়।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে বিভুরঞ্জন সরকারের ছেলে ঋত সরকার তার বাবার নিখোঁজের তথ্য জানিয়ে রমনা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

সেখানে বলা হয়, অফিসে যাওয়ার সময় বিভুরঞ্জন সরকার তার মোবাইল ফোনটি বাসায় রেখে বের হন। রাত ৯টার মধ্যে বাসায় না ফিরলে আজকের পত্রিকার সম্পাদক কামরুল হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পারেন, তিনি (বিভুরঞ্জন সরকার) অফিসে যাননি।

এরপর পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেও বিভুরঞ্জনের সন্ধান পায়নি।

সাংবাদিক বিভুরঞ্জনের জন্ম ১৯৫৪ সালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ছাত্র ছিলেন তিনি। ছাত্র ইউনিয়ন নেতা হিসাবে পরিচিত ছিলেন, যুক্ত ছিলেন বাম আন্দোলনেও।

দৈনিক আজাদের মফস্বল সংবাদদাতা হিসাবে সাংবাদিকতার শুরু, কাজ করেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র সাপ্তাহিক একতায়ও। সাপ্তাহিক যায়যায়দিনের কর্মজীবন তাকে পরিচিত করে তোলে। এরপর সাপ্তাহিক মৃদুভাষণের নির্বাহী সম্পাদক, সাপ্তাহিক চলতিপত্রের সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া ছিলেন দৈনিক মাতৃভূমির সম্পাদক, কাজ করেছেন দৈনিক সংবাদ ও দৈনিক রূপালীতেও।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *