মাইলস্টোন ট্র্যাজেডিতে নিহত ২২ জনের নাম প্রকাশ করল সরকার। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে বুধবার বিকালে প্রকাশ করা এ তালিকায় দুর্ঘটনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা ২৯ জন বলা হয়েছে। বাকী সাতজনের মধ্যে ছয়জনের মৃতদেহ ভস্মীভূত ও একজন অজ্ঞাতনামা।
অন্যদিকে মঙ্গলবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, মাইলস্টোন ট্র্যাজেডিতে নিহতের সংখ্যা ৩১ জন। আর বুধবার মধ্য রাতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরিয়া নাশরাফ নাফি (৯) নামে আরেক শিশু মৃত্যুর খবর জানায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সে হিসেবে মোট মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ৩২ জন হওয়ার কথা। আইএসপিআর-এর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সুনির্দিষ্টভাবে কোনো হাসপাতালে কতজন মারা গেছে, তা উল্লেখের পাশাপাশি বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধী রোগীর পরিসংখ্যানও দেওয়া হয়।
স্পষ্টতই মৃত্যুর এই দুই রকম সংখ্যা নিয়ে দেখা দিয়েছে বিভ্রান্তি।

বিমান দুর্ঘটনায় হতহতদের প্রকৃত সংখ্যা প্রকাশের দাবি জানিয়ে রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল ও কলেজ ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। ছবি: শামীম-উস-সালেহীন/টাইমস
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে বুধবার দেওয়া তালিকায় বলা হয়, নিহত ২২ জনের মরদেহ স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান ওই তালিকায় স্বাক্ষর করেন।
এতে জানানো হয়, নিহতদের মধ্যে রয়েছে– ৯ বছর বয়সী বাপ্পি, নাফি, সামিউল করিম, সাদ সালাউদ্দিন, সায়মা আক্তার, ফাতেমা আক্তার, মিনহাজ আরেফিন হুমায়ারা ও জুনায়েদ, ১০ বছর বয়সী নুসরাত জাহান আনিকা, ১১ বছর বয়সী উমায়ের নুর আশফিক, ১৩ বছর বয়সী আরিকসন, আরিয়ান, নাজিয়া, সারিয়া আক্তার এবং ১৪ বছর বয়সী তানভির ও আফনান ফাইয়াজ রয়েছে।
এছাড়া প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে নিহতদের তালিকায় রয়েছেন—বৈমানিক ফ্লাইট লেফটেনেন্ট মো. তৌকির ইসলাম, মাসুকা (৩৭), রজনী ইসলাম (৩৭) ও মাহরিন (৪৬)।

এদিকে, মাইলস্টোন ট্রাজেডিতে যেসব নিখোঁজের নাম আহত বা নিহতর প্রকাশিত তালিকায় নেই, তাদের পরিবারের সদস্যদের ঢাকার মালিবাগে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ ( সিআইডি) ভবনে গিয়ে ডিএনএ নমুনা দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ডা. সায়েদুর রহমান বিবৃতিতে এ অুনরোধ জানান।
তিনি বলেন, ‘নিখোঁজদের মধ্যে এখন পর্যন্ত মাত্র একটি পরিবার ডিএনএ নমুনা দিয়েছে। বাকি নিঁখোজ ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা গেলে সম্ভাব্য স্বল্পতম সময়ের মধ্যেই ডিএনএ ম্যাচিংয়ের মাধ্যমে পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।’

সবার সহযোগিতা কামনা করে বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে সিএমএইচ মর্গে রাখা ছয়টি মরদেহ এখনো শনাক্ত করা যায় নি। বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে ইতোমধ্যে এসব মরদেহের ডিএনএ প্রোফাইলিংয়ের জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। খুব দ্রুত সিআইডি ল্যাবরেটরিতে নমুনার ডিএনএ বিশ্লেষণ করা হবে।’
সোমবার দুপুরে উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধ বিমান বিধ্বস্ত হলে বিপুল সংখ্যক শিশু-কিশোর শিক্ষার্থী হতাহত হয়। ওই ঘটনায় মঙ্গলবার পালন করা হয় রাষ্ট্রীয় শোক।