ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও স্থানীয় নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহে দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংবাদিক বা গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য গণমাধ্যমকর্মী নীতিমালা- ২০২৫ জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, ভোটকক্ষের ভেতর থেকে গণমাধ্যম অথবা সামাজিক মাধ্যমে ‘সরাসরি সম্প্রচার’ করা যাবে না। তবে ইসি থেকে দেওয়া বৈধ কার্ডধারী সাংবাদিক সরাসরি ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন। ভোটকেন্দ্রে প্রবেশের পর প্রিজাইডিং অফিসারকে অবহিত করে ভোটগ্রহণ কার্যক্রমের তথ্য সংগ্রহ, ছবি তোলা এবং ভিডিও ধারণ করা যাবে। তবে কোনোক্রমেই গোপন কক্ষের ভেতরের ছবি ধারণ করতে পারবেন না গণমাধ্যমকর্মীরা।
বুধবার ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ স্বাক্ষরিত এ নীতিমালা জারি করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন ইসির সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মো. আশাদুল হক।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, ‘দুইয়ের অধিক মিডিয়ার সাংবাদিক একই সময়ে একই ভোটকক্ষে প্রবেশ করতে পারবেন না এবং ১০ মিনিটের বেশি তারা ভোটকক্ষে অবস্থান করতে পারবেন না। তারা ভোটকক্ষে নির্বাচনী কর্মকর্তা, নির্বাচনী এজেন্ট বা ভোটারদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করতে পারবেন না। ভোটকক্ষের ভিতর থেকে কোনোভাবেই সরাসরি সম্প্রচার করা যাবে না। তবে ভোটকেন্দ্রের ভিতর থেকে সরাসরি সম্প্রচার করতে হলে ভোটকক্ষ থেকে নিরাপদ দূরত্বে গিয়ে তা করতে হবে। কোনোক্রমেই ভোটগ্রহণ কার্যক্রমে বাধার সৃষ্টি করা যাবে না।’
এছাড়া সাংবাদিকরা ভোটগণনা কক্ষে অবস্থান করে ভোট গণনা দেখতে পারবেন, ছবি নিতে পারবেন তবে সরাসরি সম্প্রচার করতে পারবেন না। ভোটকক্ষ থেকে ফেসবুকসহ কোন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরাসরি প্রচার করা যাবে না বলেও নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, ‘গণমাধ্যমকর্মীরা কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ কার্যক্রম ব্যাহত হয় এমন সকল কাজ থেকে বিরত থাকবেন। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাজে কোনরূপ হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না। কোনো প্রকার নির্বাচনী উপকরণ স্পর্শ বা অপসারণ করতে পারবেন না। এছাড়া নির্বাচনী সংবাদ সংগ্রহের সময় প্রার্থী বা কোন রাজনৈতিক দলের পক্ষে বা বিপক্ষে যেকোনো ধরনের প্রচারণা বা বিদ্বেষমূলক প্রচারণা থেকে বিরত থাকবেন। নির্বাচন অনুষ্ঠানে সহায়তার জন্য নির্বাচনী আইন ও বিধিবিধান মেনে চলবেন।’
এই নীতিমালা নির্বাচন কমিশনের অধীনে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ, উপজেলা পরিষদ, সিটি কর্পোরেশন, জেলা পরিষদ, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ নির্বাচন ও উপনির্বাচনের জন্য প্রযোজ্য হবে। সংসদ ও স্থানীয় নির্বাচনের জন্য এ নীতিমালা অনুযায়ী দেশের অনুমোদিত প্রিন্ট, টেলিভিশন, অনলাইন নিউজন পোর্টাল, আইপিটিভি, ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক, আন্তর্জাতিক সংস্থা, বিদেশি সাংবাদিকদের কার্ড ও গাড়ির স্টিকার দেবে ইসি।
নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগে আবেদনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের সাংবাদিক পাস কার্ড, গাড়ি ও মোটরসাইকেলের স্টিকার দেবে ইসি সচিবালয় ও রিটার্নিং অফিসার। এছাড়া সাংবাদিকদের যাতায়াতে মোটরসাইকেলও ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া হবে।
নীতিমালায় এ বিষয়ে বলা হয়েছে, ‘সাংবাদিকদের যাতায়াতের জন্য যৌক্তিক সংখ্যক গাড়ির স্টিকার প্রদান করা হবে। প্রয়োজনীয়তার নিরিখে ও বাস্তবতার আলোকে স্থানীয় প্রশাসন সাংবাদিকদেরকে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করে সংবাদ সংগ্রহের লক্ষ্যে সীমিত পর্যায়ে মোটরসাইকেল ব্যবহারের অনুমতি দিতে পারবেন। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিককে স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের নিয়োগপত্র, প্রেস আইডির কপি, এনআইডির কপি এবং যে মোটরসাইকেল ব্যবহার করা হবে সেই মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশনের কাগজপত্র, ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং প্রয়োজনীয় অন্যান্য কাগজপত্র রিটার্নিং অফিসার বা সহকারী রিটার্নিং অফিসারের নিকট জমা দিলে যাচাই করে রিটার্নিং অফিসার বা রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোটরসাইকেল ব্যবহারের অনুমতি দেবেন।’