কাশ্মীর নিয়ে উত্তেজনার মধ্যে ভারত ও পাকিস্তানকে ‘সর্বোচ্চ সংযম’ দেখানোর আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
নিউইয়র্ক থেকে সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া জানায়, প্রকাশিত বিবৃতিতে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র জানান, মহাসচিব জম্মু ও কাশ্মীরের পরিস্থিতি উদ্বেগের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছেন এবং সব পক্ষকে এমন কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ার অনুরোধ করছেন যা অঞ্চলের স্থিতিশীলতা ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘কাশ্মীর বিষয়ে জাতিসংঘের অবস্থান জাতিসংঘ সনদ ও নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব দ্বারা নির্ধারিত। একইসঙ্গে ১৯৭২ সালের সিমলা চুক্তির কথাও স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়, যেখানে কাশ্মীরের চূড়ান্ত মীমাংসা শান্তিপূর্ণ উপায়ে করার কথা বলা হয়েছে।’
মহাসচিব ‘ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে আরোপিত বিধিনিষেধ এবং মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতির সম্ভাবনা’ নিয়েও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
কাশ্মীর ইস্যুতে উত্তেজনা বাড়ার প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘ মহাসচিব আবারও ‘দুই দেশকে শান্তি ও সংযম বজায়’ রাখার আহ্বান জানান।
কাশ্মীরের পাহেলগামে হামলার জেরে বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) জম্মু-কাশ্মীর নিয়ন্ত্রণরেখায় সীমান্তের কয়েকটি স্থানে ভারত ও পাকিস্তান সেনারা গুলি বিনিময় করেছে বলে দুই দেশের গণমাধ্যম জানিয়েছে। দুই পক্ষই গুলি বিনিময়ের জন্য একে অপরের উস্কানিমূলক আচরণকে দায়ী করেছে।
এ দিন ভারত পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য ভিসা প্রদান সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়। এর আগের দিন (২৩ এপ্রিল) পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পাঁচটি শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেয় ভারত– যার মধ্যে সিন্ধু নদ চুক্তি স্থগিত, আটারি সীমান্তে চেকপোস্ট বন্ধ এবং হাই কমিশনের কর্মীসংখ্যা হ্রাসের সিদ্ধান্ত রয়েছে।
এর জবাবে পাকিস্তান ভারতের বাণিজ্যিক বিমান চলাচলের জন্য আকাশপথ বন্ধের পাশাপাশি পানি চুক্তি স্থগিতের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছে।
এদিকে ভারত সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে পাকিস্তানকে জানিয়েছে, ইসলামাবাদের একাধিক চুক্তি লঙ্ঘনের প্রতিক্রিয়ায় তাদের পক্ষ থেকে সিন্ধু নদ চুক্তি স্থগিত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) ভারতের নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পাহেলগামে এক সন্ত্রাসী হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন, যাদের অধিকাংশই ছিলেন দেশি-বিদেশি পর্যটক। এ ঘটনায় দিল্লি-ইসলামাবাদ সম্পর্ক ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।